ধীমান রায়, কাটোয়া: বৃদ্ধ বয়সে সন্তানদের অবহেলা সহ্য করতে পারছিলেন না৷ গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন সত্তরোর্ধ্ব এক প্রৌঢ়া৷ সিভিক ভলান্টিয়ারের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচলেন তিনি৷ ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায়৷
[মাছ ধরার ছিপে উঠল সদ্যোজাতের দেহ! চাঞ্চল্য সিউড়িতে]
কাটোয়ার পানুহাটের পশ্চিমপাড়ায় থাকেন একাত্তর বছরের ইশানী রানু৷ স্বামী প্রয়াত৷ ওই বৃদ্ধার তিন ছেলে৷ কেউ হকারি করেন, কারও আবার ছোটখাটো ব্যবসা৷ সকলে যে যার মতো আলাদা থাকেন৷ বৃদ্ধা মা-কে দেখে না ছেলেরা৷ বরং মায়ের দায়িত্ব কে নেবে? তা নিয়ে নিত্য অশান্তি লেগেই থাকে৷ ছোট থেকে যাদের বুকে আগলে মানুষ করলেন, তাদের এমন আচরণে মানসিক আঘাত পেয়েছিলেন ইশানীদেবী৷ চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন তিনি৷ মঙ্গলবার সকালে কাটোয়ার মরিঘাটে গিয়ে গঙ্গায় ঝাঁপ দেন ওই বৃদ্ধা৷ ঘটনাচক্রে তখন গঙ্গায় স্নান করতে এসেছিলেন ভাতার থানার সিভিক ভলান্টিয়ার অমিত পাল৷ তিনি বলেন, ‘‘ঘাটে সাইকেল রেখে সবে জামাপ্যান্ট ছাড়ছি৷ দেখি এক বৃদ্ধা জলে তলিয়ে যাচ্ছেন৷ গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে তাঁকে উদ্ধার করি৷’’ ইশানীদেবীকে যখন পাড়ে নিয়ে আসেন অমিত, ততক্ষণে তিনি জ্ঞান হারিয়েছেন৷ ওই বৃদ্ধাকে একাই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে যান ওই সিভিক ভলান্টিয়ার৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভাল আছেন ইশানী রানু৷
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে আসেন ইশানী রানুর পুত্রবধূ ও নাতিরা৷ পুত্রবধূ টুম্পা রানুর দাবি, তাঁর শাশুড়ির গঙ্গাস্নান করার খুব নেশা৷ বাড়িতে কাউকে না জানিয়েই কাটোয়ার মরিঘাটে চলে গিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু, বাড়ির লোক আসার আগেই হাসপাতালে কয়েকজনের কাছে ইশানীদেবী নিজের দুর্দশার কথা জানিয়েছিলেন বলে খবর৷ পৈতৃক বাড়ি কাটোয়ার সুদপুরে গ্রাম৷ কিন্তু ছোট থেকে ভাতারের মামাবাড়িতে থাকেন অমিত পাল৷ ভাতার থানায় সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি করেন তিনি৷ ভাতার থানার ওসি পুলক মণ্ডল বলেন, ‘‘অমিতের জন্য আমরা গর্বিত৷’’
ছবি: জয়ন্ত দাস
[ দুঃস্থ পড়ুয়াদের মুখে হাসি ফোটাতে পুজোয় জামা উপহার শিক্ষকদের
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.