ছবি: প্রতীকী
বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: নানারকম প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যৌন হেনস্তা করা হয় ৯ বছরের শিশুকে! এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। ওই নাবালিকার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের (Civic Volunteer) নাম সুপ্রিয় পাল। বয়স ৩০। তার বাড়ি নদিয়ার চাকদহ থানার ঘেটুগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের দিঘরা গ্রামে। সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে চাকদহ থানায় কর্মরত সুপ্রিয়। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা ৯ বছরের এক নাবালিকার বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াত ছিল তার। সুপ্রিয়কে মামা বলে ডাকত ওই নাবালিকা। দীর্ঘদিনের পরিচয়ের সুবাদে সুপ্রিয়র বাড়িতেও অবাধ যাতায়াত ছিল ওই নাবালিকার। সিভিল ভলান্টিয়ার হওয়ার দরুন ওই নাবালিকার বাড়ির লোকজনও যথেষ্ট বিশ্বাস করে ফেলেছিলেন সুপ্রিয়কে। সেই বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়েই নাবালিকাকে যৌন হেনস্তা করে সুপ্রিয় বলে অভিযোগ।
নাবালিকা পরিবারের অভিযোগ, “কখনও লজেন্স,কখনও বা নানা ধরনের খেলনা কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই নাবালিকাকে তার বাড়ি নিয়ে গিয়ে যেত সুপ্রিয়। এভাবেই দিনের পর দিন যৌন হেনস্তা করা হয় তাকে। সুপ্রিয়র বাবা বিশেষভাবে সক্ষম। তার মায়ের আবার মানসিক সমস্যা রয়েছে। ফলে ছেলের আচরণের দিকে বিশেষ নজর দিতে পারেন না তাঁরা। এই সবকে হাতিয়ার করেই নিজের যৌন চাহিদা মিটিয়ে যায় সুপ্রিয়। কখনও কোথাও বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করেও ওই নাবালিকার উপর যৌন অত্যাচার করা হত বলে অভিযোগ।
প্রায় মাস তিনেক ধরে এই ধরনের কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও বিষয়টি ওই নাবালিকার পরিবার জানতে পারেননি। তবে কয়েকদিন আগে নির্যাতিতা নিজের দূর সম্পর্কের এক দিদিকে পুরো ঘটনা খুলে বলে। এরপর বিষয়টি নাবালিকার মা-বাবার কানে যায়। সব ঘটনা জানতে পেরে বাড়ির লোকজন সোমবার রাতে থানায় সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল গভীর রাতে চাকদহ থানার পুলিশ সুপ্রিয় পালকে গ্রেপ্তার করে। আজ, মঙ্গলবার তাকে কল্যাণী মহকুমা আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক অভিযুক্তকে জামিন দেননি।
এদিন কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে। যদিও অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। তার বক্তব্য, “আমি বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। মায়ের মানসিক সমস্যা রয়েছে। বাবা শারীরিক দিক থেকে বিশেষভাবে সক্ষম। সংসারের সমস্ত দায়িত্ব আমার উপর। নিজের কাজ ও সংসার সামাল দিতেই আমি হিমশিম খাই। আমি এই ধরনের কোনও খারাপ কাজ করিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.