মৃত সিভিক ভলান্টিয়ার নিরঞ্জন দাস। ছবি: সুশান্ত পাল।
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: তারাপীঠ শ্মশান থেকে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে ছড়াল তীব্র চাঞ্চল্য। শনিবার গভীর রাতে শ্মশান থেকে দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। কীভাবে মৃত্যু হল, তা জানতে দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে রামপুরহাট হাসপাতালে। মৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের ভাইয়ের দাবি, দাদার কপালের ডান দিকে একটি আঘাতের চিহ্ন আছে। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। যদিও পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়েছে, শরীরে আঘাতের কোনও চিহ্ন নেই। পরিবার সূত্রে খবর, স্ত্রীকে ফেরানোর জন্য ওই সিভিক ভলান্টিয়ার সম্প্রতি তারাপীঠে তন্ত্রসাধনা করছিলেন। শনিবারও সেই কারণে গিয়েছিলেন। এর পর তাঁর মৃত্যু হওয়ায় স্বভাবতই তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
মৃতের নাম নিরঞ্জন দাস, বয়স ৩৭ বছর। নলহাটির (Nalhati) ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নিরঞ্জন জিআরপি-তে সিভিক ভলান্টিয়ার পদে কর্মরত। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রী বছর চারেক আগে তাঁকে ছেড়ে চলে যায়। বিবাহবিচ্ছেদের (Divorce) মামলাও চলছে। কিন্তু তাতে অর্থ নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে থমকে গিয়েছে মামলা। তবে স্ত্রী নিরঞ্জনের থেকে আলাদাই থাকেন। স্ত্রীকে খুব ভালোবাসতেন নিরঞ্জন। তাঁকে ঘরে ফেরানোর প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন এতদিন। পরবর্তীতে তিনি তন্ত্রসাধনারও আশ্রয় নেন।
মৃত নিরঞ্জনবাবুর ভাইয়ের স্ত্রী পারমিতা দাস জানাচ্ছেন যে ভাসুর সন্ধেবেলা ফোন করে জানিয়েছিলেন, রিপন নামে এক বন্ধুর সঙ্গে তারাপীঠ (Tarapith) শ্মশানে যাচ্ছেন। তখন প্রায় সাড়ে ৭টা। এর পর ৯টা নাগাদ আবার ফোন করেন। তখন জানান যে রিপন সঙ্গে যাননি। তিনি একাই শ্মশানে গিয়েছেন। পরে আবার যোগাযোগ করবেন।
এর পর ভাই ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ পান দীর্ঘক্ষণ। রাত ১১টা পর্যন্ত তাঁরা যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। তখন থেকেই দুশ্চিন্তা বাড়ছিল। রাত ১২টা নাগাদ তারাপীঠ থানার পুলিশ ফোনে তাঁদের জানান, নিরঞ্জনবাবুকে শ্মশান থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রামপুরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত (Death) বলে ঘোষণা করেন। এই খবরে স্বভাবতই হতভম্ব হয়ে যান পরিবারের সকলে। ভাইয়ের অভিযোগ, দাদাকে পরিকল্পিতভাবে শ্মশানে ডেকে নিয়ে খুন করা হয়েছে। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.