শেখর চন্দ্র, আসানসোল: এবার অবৈধ কয়লার ডিপোতে (Illegal Coal factory) হানা দিতে গিয়ে আসানসোলে বাধার মুখে কেন্দ্রীয় সংস্থা। শুধু বাধা নয়, বিভিন্ন অভিযোগের মুখে পড়তে হল সেন্ট্রাল আইবি (IB) ও সিআইএসএফকে (CISF)। ডিপো মালিকের অভিযোগ, অভিযানের নামে টাকা চাইতে এসেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। এমনকি তদন্তকারীরা কয়লা ডিপোর কর্মীদের মারধর করে মোবাইল কেড়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ।
রাতভোর টানাপোড়েনের পর লিখিত অভিযোগে কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার রাতে তারা যখন ওই এলাকায় গিয়েছিলেন তখন তাদের চোখে পড়ে কয়লা বোঝাই দুটি ট্রাক্টর যাচ্ছে ওই রাস্তায়। ট্রাক্টর দুটিকে ধাওয়া করেন তার। ট্রাক্টর দুটি ওই প্রাইভেট ডিপোতে ঢুকে যায়। কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরা ডিপোতে ঢুকতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। তখন তারা স্থানীয় পুলিশকে জানায়। ডিপোতে ঢুকে তারা দেখতে পান ওই ডিপো কার্যত অবৈধ কয়লার পাহাড়। রয়েছে কয়লা তোলার মেশিন। কয়লা বোঝাই ট্রাক। কয়লা বোঝাই হবে তার জন্য রয়েছে বেশ কিছু খালি ট্রাক। এর সঙ্গে বেশ কিছু জাল নথিও উদ্ধার করে তারা। জমা করা কয়লার কাগজপত্র হিসেব মেলাতে না পেরে ডিপো কর্তৃপক্ষ দাবি করে ঝাড়খণ্ড থেকে কয়লা আনা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, নিয়ম অনুযায়ী ঝাড়খন্ড থেকে কয়লা আনলে ডি ফর্ম জরুরি। কিন্তু তা দেখাতে পারেনি কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। এই মর্মে সিআইএসএফ বাহিনী বেশ কিছু ট্রাক, খালি ট্রাক, কয়লা, জেসিবি মেশিন বাজেয়াপ্ত করে। কোম্পানির মালিকের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে পুলিশের দাবি, তাদের না জানিয়েই সেন্ট্রাল আইবি পুলিশ লেখা গাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। শুধু তাই না, কলকাতা পুলিশ লেখা গাড়িতে কারা এসেছিলেন? কোন অফিসার ছিলেন? তার জবাব মেলেনি। অবৈধ কয়লার ডিপোতে হানাকে কেন্দ্র করে প্রায় ২৫ ঘন্টা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনের টানাপোড়েন চলার পর অভিযোগ গৃহীত হয় জামুড়িয়া থানায়। লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় দুপক্ষেরই।
বেসরকারি কয়লা ডিপোর লিগ্যাল অ্যাডভাইজার শেখ মঈনের অভিযোগ, রাতে “কলকাতা পুলিশ” লেখা একটি গাড়িতে তিনজন সিভিল পোশাকে অফিসার কারখানায় ঢোকেন। পাঁচ লক্ষ টাকা দাবী করে কর্মীদের মারধোর করেন। খবর পেয়ে আমরা ছুটে আসি। তারপর দেখি সেন্ট্রাল পুলিশ লেখা আরেকটি গাড়ি আসে। পরে সিআইএসএফ বাহিনীও চলে এসেছে। আমরা দাবী জানাই আমাদের কয়লা ডিপোর সমস্ত কাগজপত্র বৈধ। অবৈধ কিছু থাকলে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করুন ও সিজার লিস্ট দিন। কিন্তু তারা কোনও সিজার লিস্ট দিচ্ছে না। এমনকি আমাদের প্রশ্ন ছিল, কলকাতা পুলিশ লেখা যে গাড়িটি এসেছিল পরে সেটি চলে যায়। তাতে কারা ছিল? তারা কি কলকাতা পুলিশ? স্থানীয় থানাকে জানিয়ে এসেছে? অফিসারদের কাছে কোনও উত্তর পাইনি আমরা। যদিও সেন্ট্রাল আইবির দাবি তাদের যাবতীয় অভিযোগ জামুড়িয়া থানায় লিখিত ভাবে জানিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.