শুভঙ্কর বসু ও শান্তনু কর: আবারও উদ্বোধন হবে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের। এবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবে রাজ্য সরকার ও কলকাতা হাই কোর্ট। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারকে কলকাতা হাই কোর্ট প্রস্তাব দিয়েছে, উত্তরবঙ্গের মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আগামী ১১ মার্চ থেকে পুরোদমে চালু করে দেওয়া হবে সার্কিট বেঞ্চ। সেই কারণে আগামী ৯ মার্চ উদ্বোধন করা হবে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের। সেই অনুষ্ঠানে হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার-সহ সব বিচারপতির থাকার কথা। রাজ্য প্রস্তাবে সায় দিলে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুষ্ঠানে থাকার আমন্ত্রণ জানানো হবে। যেহেতু পরিকাঠামো-সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়ে খরচ বহন করে রাজ্য সরকার, তাই রাজ্যকে জানিয়েই সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন করা হয় বলে জানা গিয়েছে।
[বিধায়ক খুনে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর, সাসপেন্ড থানার ওসি ও দেহরক্ষী]
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ময়নাগুড়ি থেকেই সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন করে দেন। এর পরেই তিক্ততার জল গড়ায়। আর রাজ্যের বিচারবিভাগের সচিবকে লেখা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের চিঠির পর সম্পর্কের ভাঙন সরাসরি প্রকাশ্যে এসেছে। গত বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রের তরফ থেকে নোটিফিকেশনের নির্দেশ আসে হাই কোর্টে। তারপর শুক্রবারই ‘স্পিড পোস্টে’ হাই কোর্ট রাজ্যকে উদ্বোধনের দিনক্ষণ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। তবে তার আগে রাজ্য ও হাই কোর্টকে ছাড়াই ময়নাগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যের অভিযোগ, একতরফাভাবে সার্কিট বেঞ্চ চালু করা যায় না। মুখ্যমন্ত্রীও ইকো পার্কে সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষোভ উগরে দেন কেন্দ্রের মোদি সরকারের প্রতি। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কও তলানিতে পৌঁছয়।
প্রায় চার মাস আগে মুখ্যমন্ত্রীর ওই সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন করার কথা ছিল। হাই কোর্টের পক্ষ থেকে প্রক্রিয়াও চূড়ান্ত করা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র কোনওরকম বিজ্ঞপ্তি জারি না করায় সূচনা অনুষ্ঠান পিছিয়ে যায়। কেন্দ্র সাধারণত এই সব ক্ষেত্রে এক লাইনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তবে এমন গড়িমসিতে হাই কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জ্যোর্তিময় ভট্টাচার্য ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ তৈরিতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা খরচ করেছে রাজ্য। পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গের মানুষের চাহিদা মেনেই এই কাজ দ্রুত করা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার নরেন্দ্র মোদির উদ্বোধনের পর বিষয়টি জটিল হয়েছে। হাই কোর্টের কোনও বিচারপতিকেও সেই অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কাছে এ ব্যাপারে এমন সময়ে চিঠি আসে, যখন তাঁর পক্ষে যাওয়া সম্ভব ছিল না। নবান্নের বক্তব্য, হাই কোর্ট যেহেতু কর্মী বাছাই—সহ সব ব্যাপারে রাজ্যের উপর নির্ভর করে, তাই রাজ্যের কাছে প্রস্তাব দিয়ে চিঠি পাঠাতেই পারে। সেক্ষেত্রে ৯ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে আবার উদ্বোধন করা হবে সার্কিট বেঞ্চের। সেই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি ছাড়াও অন্য বিচারপতিরা থাকবেন। ১১ মার্চ যাতে পুরোদমে সার্কিট বেঞ্চ চালু করা যায়, সে ব্যাপারেই নজর দিচ্ছে রাজ্য ও হাই কোর্ট।
[ তথ্য পাচারের অভিযোগে ফের গ্রেপ্তার ভারতী ঘনিষ্ঠ পুলিশ আধিকারিক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.