সম্যক খান, মেদিনীপুর: স্যালাইন কাণ্ডের তদন্তে তৎপর সিআইডি। নিহত প্রসূতির পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। কীভাবে প্রসূতির মৃত্যু হল, সে সম্পর্কে নানা খোঁজখবর নেন তাঁরা। সদ্যোজাত কেমন আছে সে বিষয়েও জানতে চান। বুধবার মৃত মামণির সন্তানকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। বলে রাখা ভালো, মঙ্গলবার থেকেই দফায় দফায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডির কলকাতা থেকে আসা দুই সদস্যের একটি দল। হাসপাতাল সুপার জয়ন্ত রাউৎ থেকে শুরু করে অস্ত্রোপচারের দিন দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন আধিকারিকরা। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গেও কথা বলেন।
গত ৮ জানুয়ারি, রাতে পাঁচ প্রসূতির সি সেকশনের ঘটনায় যত বিপত্তি। মৃত্যু হয় প্রসূতি মামণি রুইদাসের। সদ্যোজাত পুত্রসন্তানকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। তবে দুদিন পরই ফের তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। জণ্ডিসের উপসর্গ ছিল তার। মাতৃমা বিভাগের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল সে। বুধবারই বিকেলে তাকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সে সম্পূর্ণ সুস্থ বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সিআইডি টিম এদিন প্রথমেই হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগে চলে যায়। বর্তমানে শিশুটির দেখভালের দায়িত্বে থাকা তার পিসি রুম্পা দাসের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন আধিকারিকরা। তাঁর নিজের কটি সন্তান আছে তা জানতে চান সিআইডি কর্তারা। আরও জানতে চান, তিনি সদ্যোজাত এই শিশুটিকে মানুষ করতে চান কিনা। রুম্পাদেবী জানান, তার নিজের দুই সন্তান আছে। যদি ভাই দেবাশিস চান, পিসির কাছে থেকে ছেলে বড় হবে। তবে নিশ্চয়ই তিনি সে দায়িত্ব পালন করবেন বলেই জানান।
রুম্পার দাবি, সিআইডি কর্তারা তাঁকে একটি কাগজে সই করতে বলেন। তবে তিনি সই করেননি। তাঁর স্বামী ওই কাগজে সই করেন। আধিকারিকরা শিশুটির বাবা তথা মৃত মামণির স্বামী দেবাশিষ রুইদাসের সঙ্গেও কথা বলেন। তাঁর ঠিকানা ও ফোন নম্বর নিয়ে যান। সিআইডি কর্তারা চলে যাওয়ার পর বিকেলে দেবাশিসবাবু তাঁর শিশুসন্তানকে নিয়ে চন্দ্রকোণা রোডে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। মৃত মামণির সন্তান সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। তবে এসএসকেএমে ভর্তি থাকা আরেক প্রসূতি রেখা সাউয়ের সদ্যোজাত পুত্রসন্তান এখনও আশঙ্কাজনক। তাকে ভেন্টিলেশনেই রাখা হয়েছে।
এদিকে, প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তারদের অপারেশন করা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক দেখা দিয়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তাই এক বিবৃতি জারি করা হয়। তাঁদের অযথা ‘বলির পাঁঠা’ বানানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পিজিটিরা ওটি করতে পারবে না বলে যে নির্দেশিকা জারি হয়েছে তারও বিরোধিতা করা হয়েছে। সিনিয়র ডাক্তারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার দায়িত্ব কার সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে। অপরদিকে এই ঘটনাকে ‘প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.