শেখর চন্দ্র, আসানসোল: জেলের অন্দরে বসেই কুকীর্তির ছক! ‘গ্যাংস্টার’, ‘জুয়েল থিফ’, ‘তোলাবাজ’ সুবোধ সিংকে বিহারের বেউর জেল থেকে ট্রানজিট আনা হল আসানসোলে। সে-ই রানিগঞ্জের সোনার দোকানে ডাকাতির’মাস্টার মাইন্ড’। আজ, রবিবার আসানসোল সিজিএম কোর্টে তোলা হচ্ছে তাকে। ডাকাতির ঘটনায় মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই সুবোধের নাম উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর।
বেলঘরিয়া শুটআউট এবং হুমকি ফোনের পর কয়েকদিন চুপচাপ থাকলেও, ফের স্বমূর্তিতে ফিরেছে বেউর জেলে বন্দী সুবোধ। আদালতের প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট নিয়ে তাকে বিহারের জেল থেকে এ রাজ্যে আনার তোড়জোড় আগেই শুরু করেছিল সিআইডি। অভিযোগ, জেলের সেক্টর-৩-এর ওয়ার্ড নম্বর ২২-এর ঘাঁটিতে বসে ফের বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের সম্পন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে ‘তোলা’ চেয়ে ফোন শুরু করেছে সুবোধ। কখনও ফোন করছে তার সহযোগী রমেশ সিং, কখনও সানয় সিং। সাগরেদরা বিহারের নম্বরের সিমকার্ড ব্যবহার করলেও, হুমকি ফোনের ক্ষেত্রে সুবোধ সিং পুরনো পন্থাতেই আস্থা রাখছে। ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল (ভিওআইপি) পদ্ধতিই ব্যবসা করছে।
কয়েকদিন আগে সেরকমই এক ভিওআইপি কলের (সাইপ্রাসের সার্ভার ব্যবহার করে) মাধ্যমে বারাকপুরের এক প্রতিষ্ঠিত বিরিয়ানি ব্যবসায়ীর পুত্র তথা তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যকে হুমকি দিয়ে ২০ লক্ষ টাকা তোলা চেয়েছে গ্যাংস্টার সুবোধ। হুমকি ফোনের জেরে আতঙ্কিত ব্যবসায়ী মহল। কারণ ওই বিরিয়ানি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তোলা না মেলায়, গত ২০২২ সালের মে মাসে নিজের শুটারদের দিয়ে গুলি চালিয়ে দুজনকে জখম করেছিল সুবোধ। ফের সেই ব্যবসায়ী পুত্রকে টার্গেট করে তোলা চেয়ে হুমকি দেওয়ায় ঘুম ছুটেছে পরিবারের। আতঙ্কিত ব্যবসায়ী পুত্র অনির্বাণ দাস ও পরিবারের লোকজন পুলিস কমিশনারের দ্বারস্থ হন। টিটাগড়ের বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লা খুনের মামলায় যোগ রয়েছে সুবোধের। বেউর থেকে সুবোধ সিংয়ের অঙ্গুলিহেলনেই মণীশ খুন হয়েছিলেন বলে ওঠা অভিযোগের তদন্ত এখনও চলছে। সেই সুবোধকেই এদিন আসানসোলের আদালতে তাকে পেশ করছে সিআইডি। সুবোধকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্তের জট খুলতে চান তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.