চিত্তরঞ্জনে রেলের সেই দ্রুত গতির ইঞ্জিন। ছবি: মৈনাক মুখোপাধ্যায়।
চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: এ যেন ‘উসেইন বোল্ট’। দেশের সর্বোচ্চ গতির ইঞ্জিন ছুটবে বিদ্যুৎ মানব বোল্টের মতোই। ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার। রাজধানী শতাব্দীর বগির আগে এই ইঞ্জিন জুড়ে দিলেই বুলেট ট্রেন সফরের রোমাঞ্চ পেয়ে যেতে পারেন। ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর চালু হলে, সেই ট্র্যাকে ১৩ হাজার টন পণ্যের মালগাড়ি এই ইঞ্জিন দিল্লি থেকে কলকাতা পৌঁছে দেবে ২৪ ঘণ্টাতেই। এই ইঞ্জিন বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস (সিএলডব্লু)।
ফ্রেট করিডরের রেললাইন পাতার জন্য আমেরিকা থেকে বিশেষ যন্ত্র আনা হয়েছে। এখন যেমন ১৩ মিটার পরপর লাইন জয়েন্ট থাকে, সেটা ফ্রেট করিডরের লাইন থাকবে ২৬০ মিটার পরপর। এতে রেলের গতি বাড়বে, আওয়াজও কম হবে। এই পথে যেসব মালগাড়ি চলবে, তার ইঞ্জিন আনা হবে জাপান থেকে। ১০০টি অত্যাধুনিক ইঞ্জিন আনা হবে। ওই একই প্রযুক্তিতে ওয়্যাপ ফাইভ গোত্রের ইলেকট্রিক ইঞ্জিনটি তৈরি হচ্ছে চিত্তরঞ্জনে। এখন মালগাড়িগুলি ছ’হাজার টনের জিনিস বহন করে। তা বেড়ে ১৩ হাজার টন হবে। ডবল কন্টেনার চাপানো থাকলে উঁচুও হবে মালগাড়িগুলি। তাই চিত্তরঞ্জনের ওয়্যাপ ফাইভ গোত্রের ইলেকট্রিক ইঞ্জিনটির প্যান্টোগ্রাফও তৈরি হয়েছে অত্যাধুনিক। যা উঁচু করা যাবে অনায়াসে।
এই ইঞ্জিনে ট্রেনচালক ও কর্মীদের জন্য ভয়েস এবং ভিডিও রেকর্ডিং সিস্টেম রয়েছে। ইঞ্জিনের ভিতরে কী কী ঘটছে, তার সমস্ত তথ্য পর্যালোচনার জন্য সংরক্ষিত থাকবে। কোনও ধরনের বিপত্তি ঘটলে এই তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যাবে। এই ইঞ্জিন দিয়েই ভবিষ্যতে রাজধানী, শতাব্দীর মত ট্রেনগুলি চালানো হবে বলে জানা গিয়েছে। তখন কুলীন এই ট্রেনগুলির গতিবেগ প্রতিঘণ্টায় আর ১৩০-১৪০ কিমি নয়, ছুটবে ২০০ কিমি গতিতে। সিএলডব্লু-র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক মান্তার সিং বলেন, “ওয়্যাপ ফাইভ গোত্রের এই ইলেকট্রিক ইঞ্জিনটি এরোডায়নামিক এবং এরোগোনোমিক নকশায় তৈরি। এর ফলে এই ইঞ্জিন যেমন উচ্চগতি সম্পন্ন, তেমনই বিদ্যুৎও সাশ্রয় করবে।” এই সাফল্যকে স্মরণীয় করে রাখতে সিএলডব্লু কর্তৃপক্ষ নতুন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিংটিকে নয়া ইঞ্জিনের ডিজাইনের ধাঁচেই সাজিয়েছেন। নিজেদের কীর্তিকে স্মরণে রাখতেই ভবনের চেহারা পালটে যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.