সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: সুন্দর, নতুন জামা পরে স্কুলে শিশুরা হাজির। আজ যে তাদেরই দিন – শিশুদিবস। দেদার মজা হবে, বলে দিয়েছিলেন দিদিমনিরা। কিন্তু কোথায় মজা! স্কুল খুলতেই দেখা গেল যত্রতত্র পড়ে আছে মলমূত্র, মদের বোতল। এদিক-ওদিক ছড়িয়ে কন্ডোম। রান্নাঘরের কল ভাঙা।আলমারিও ভেঙে পড়ে আছে। দৃশ্য দেখে মাথায় হাত শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী থেকে অভিভাবক, সকলেই।
স্কুল সাফ করতেই বাইরে বের করে দেওয়া হল ক্ষুদে ছাত্রছাত্রীদের। বন্ধ হয়ে গেল শিশুদিবসেরও অনুষ্ঠান। ক্ষুব্ধ অভিভাবক-সহ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। ক্ষোভে ফুঁসছেন কাউন্সিলরও। দুর্গাপুর নগর নিগমের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের এমএএমসি বি–১ প্রাইমারি স্কুল। বেশ কিছুদিন ধরেই এই স্কুলে অন্ধকার নামলেই দুষ্কৃতীদের আড্ডা হয়ে ওঠে। আড্ডার নামে চলে মদ্যপান। চলে আরও নানা অসামাজিক কাজকর্ম। তালা
ভেঙে দুষ্কৃতীরা ঢুকে একপ্রকার তাণ্ডব চালায় মাঝেমধ্যেই। কিন্তু বুধবার রাতে তা চরম সীমায় পৌঁছে গেল। জলের পাইপ, বেসিন, স্কুলের অ্যাসবেস্টসের ছাদ থেকে দুষ্কৃতীরা। বেসিন ভাঙে মাঝে মাঝেই। স্কুলে বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য নির্দিষ্ট শ্রেণিকক্ষে ঢুকে সেখানকারও সামগ্রী তছনছ করে দুষ্কৃতীরা।
দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চললেও পুজোর পর থেকে তাণ্ডব আরও বেড়েছে বলে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দেবযানী রাহার অভিযোগ। তাঁর কথায়,“ কখনও স্কুলের গেটের তালা ভেঙে, আবার কখনও পাঁচিল টপকে স্কুলে ঢুকছে দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় কাউন্সিলর ও অভিভাবকদের বলছি। কিন্তু যে কে সেই। প্রতিদিনই অত্যাচারের মাত্রা বাড়ছে। এই পরিবেশ শিশু মননে আঘাত করবে। তাই শিশু দিবসের অনুষ্ঠানও এই কারণে বাতিল করতে বাধ্য হলাম।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাছেই ভ্যাম্বে কলোনির কিছু দুষ্কৃতী সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা আটটা হলেই ঢুকে যাচ্ছে স্কুলে। তারপর স্কুলের নিশ্চিন্ত ঘেরাটোপে চলে তাদের ‘আমোদ’। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার লাভলি রায় জানান, “ অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। স্কুলে দুষ্কৃতীদের অত্যাচার বেড়েই চলেছে। দফায় দফায় পুলিশকে বললেও তারা উদাসিন। বৃহস্পতিবার থেকে ওখানে নিরাপত্তাকর্মী দেওয়ার চেষ্টা করছি। এই ব্যাপারে পুলিশের উচ্চ আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলব।”
ছবি: উদয়ন গুহরায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.