ছবি: প্রতীকী
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: স্রেফ ভাত নষ্ট করার জন্য এত বড় শাস্তি! তিন বছরের শিশুর সারা গায়ে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিল মা। এমন ঘটনার পর পুলিশি জেরার মুখে পড়ে নিজের দোষ কবুল করেছে ওই মহিলা। ঘটনা ঘিরে ক্যানিংয়ের (Canning) তালদির চাঁদখালি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযুক্ত শিশুর মা ও বাবাকে আটক করেছে। শিশুটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বারুইপুর (Baruipur) থানার অন্তর্গত রাসমাঠ এলাকার অর্পিতার সঙ্গে বছর ছয়েক আগে তালদির চাঁদখালির দেবাশিস আচার্যের বিয়ে হয়। দম্পতির বছর তিনেক বয়সের এক ফুটফুটে পুত্র সন্তান রয়েছে। অভিযোগ, বুধবার ভাত নষ্ট করে ফেলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে অর্পিতার শ্বশুর হরিহর আচার্যের সঙ্গে তাঁর একপ্রস্থ ঝগড়া হয় অর্পিতার। অভিযোগ, সেই ঝগড়ার সূত্র ধরে বৃহষ্পতিবার বিকেলে ঘরের দরজা বন্ধ করে গ্যাস ওভেনে খুন্তি গরম করে নিজের ছেলের দেহে একের পর এক ছ্যাঁকা দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে ওই মহিলা।
গরম খুন্তির ছ্যাঁকায় শিশুটি চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করে। তার চিৎকারে বাড়ির অন্যান্যরা দৌড়ে আসে। শিশুটিকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলেও ঘরের দরজা বন্ধ থাকার জন্য নিরুপায় হয়ে পড়েন। এরপর শিশুর বাবা দেবাশিস আচার্য স্থানীয় এক মহিলা সমিতির সদস্যকে ঘটনার কথা জানিয়ে দ্রুততার সঙ্গে আসার জন্য অনুরোধ করেন। ঘটনাস্থলে হাজির হয় মহিলা সমিতির একাধিক সদস্য। তাঁরা শিশুটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যন।
এহেন ঘটনার খবর পেয়ে ক্যানিং থানার পুলিশ শিশুর বাবা ও অভিযুক্ত মা কে আটক করেছে। অর্পিতার শ্বশুর হরিহর আচার্য ও শাশুড়ি অনিন্দিতা আচার্যের অভিযোগ, প্রতিনিয়ত অশান্তির তৈরি করে নিজের ছেলেকে প্রাণে মেরে তাঁদের ফাঁসানোর হুমকি দিতে থাকে। এমনকী নিজেও কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে। আর নিজের শিশু সন্তানের উপর অত্যাচারের সত্যতা স্বীকার করে অর্পিতা আচার্য জানিয়েছে, “আমার স্বামী, ভাসুর ও শ্বশুর আমার এবং আমার সন্তানের উপর প্রতিনিয়ত অত্যাচার করে। রাগের বশে আমি আমার সন্তানকে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়েছি।” প্রতিবেশীরা অভিযুক্ত মায়ের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.