পলাশ পাত্র, তেহট্ট: এক শিশুর মৃত্যু নিয়ে রহস্য ঘনীভূত নদিয়ার তেহট্টে৷ বৃহস্পতিবার সকালে মৃত শিশু সন্ধের পর আচমকাই মূত্রত্যাগ করায়, বেঁচে থাকার ইঙ্গিত মেলে৷ তাতেই আশান্বিত হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা জানান, কিছুক্ষণ আগেই মৃত্যু হয়েছে শিশুটির৷ তাহলে কি সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত তার দেহে প্রাণ ছিল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই জমে উঠেছে রহস্য৷ চিকিৎসকরা কোনও সদুত্তর দিতে পারছেন না৷ পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে৷
গত মঙ্গলবার তেহট্টের উঁচুপাড়ার বাসিন্দা ৮ বছরের মৌদীপ অধিকারী হোগলবেড়িয়ার রাজাপুরে মামারবাড়ি গিয়েছিল৷ সেখানে তার জ্বর হয়৷ ভরতি করানো হয় নিকটবর্তী করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে৷ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে, তাকে স্থানান্তরিত করা হয় বহরমপুরের হাসপাতালে৷ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ মৃত্যু হয় মৌদীপের৷ বাড়ির লোকজন খবর পেয়ে সেখান থেকে ছেলের মৃতদেহ প্রথমে নিয়ে যায় রাজপুরের মামারবাড়িতে৷ সেখান থেকে বিকেল নাগাদ দেহ পৌঁছায় মৌদীপের নিজের বাড়ি উঁচুপাড়ায়৷ সেখানেই শেষকৃত্যের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা৷ তখনই আচমকা দেখা যায়, মৌদীপ মূত্রত্যাগ করছে৷
এই দৃশ্যেই আতান্তরে পড়ে পরিবার৷ তড়িঘড়ি স্থানীয় এক ডাক্তারকে ডেকে আনা হয়৷ পরিবারের সদস্যদের দাবি, ওই চিকিৎসক তাঁদের জানান যে মৌদীপ বেঁচে আছে৷ মৃত শিশুর শরীর যেমন ঠাণ্ডা থাকে, তেমন ঠাণ্ডা নেই৷ বরং শরীরে উষ্ণতা আছে৷ যা দেখে ওই চিকিৎসকের মনে হয়েছে যে মৌদীপ জীবিত৷ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দরকার৷ সেকথা শুনে বাচ্চাটিকে তেহট্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সৌমেন সেনগুপ্ত নামে জানান, কিছুক্ষণ আগেই মৌদীপের মৃত্যু হয়েছে৷ এরপরই রহস্য আরও ঘনীভূত হয়৷
পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, ছেলে বেঁচেই ছিল৷ কিন্তু চিকিৎসক যথাযথ পরীক্ষা করেননি, তাতেই মৃত্যু হয়েছে৷ এদিকে, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক সৌমেন সেনগুপ্তর পালটা দাবি, সন্ধে ৬ টানা নাগাদ শিশুটিকে আনার পরপরই তিনি বুঝতে পেরেছেন যে সে মৃত৷ সেটাই বাড়ির লোককে জানিয়েছেন৷ এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে মৌদীপের মৃত্যুর সময় ঠিক কখন? সকাল ৯টা নাকি সন্ধে ৬টা? যদি সকালেই তার মৃত্যু হয়, তাহলে সন্ধেবেলা মূত্রত্যাগ করল কীভাবে? কীভাবেই বা মৃত্যু হল তার?এসব প্রশ্নের কোনও যুক্তিগ্রাহ্য উত্তর মিলছে না৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পরই তার মৃত্যুর সময় এবং কারণ বোঝা যাবে বলে দায় এড়াচ্ছেন চিকিৎসকরা৷ সবমিলিয়ে, চরম রহস্য এক শিশুর মৃত্যু নিয়ে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.