ছবি: প্রতীকী
রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: প্রসূতি ও শিশুদের চিকিৎসায় অত্যাধুনিক ব্যবস্থা চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে এসেও শিশুদের উন্নত চিকিৎসার হালহকিকত জানতে চান পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছে। তবে কালনা মহকুমা হাসপাতালে গত আড়াই মাসে শিশু মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। প্রসূতি ও সদ্যোজাত শিশুদের উন্নত চিকিৎসা দিতে কালনায় এসএনসিইউ বিভাগ চালু করা হয়। তা সত্ত্বেও গত অক্টোবর থেকে চলতি সপ্তাহ পর্যন্ত এই হাসপাতালে প্রায় ২০টি শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।
[রাজনৈতিক সংঘর্ষে গুলি-বোমা, উত্তপ্ত ময়নায় পুড়ল পুলিশের গাড়ি]
যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই মৃত্যুর হার অস্বাভাবিক নয় বা খুব বেশি নয়। শিশু মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই। তিনি বলেন, “তথ্য না দেখে কিছু বলা যাবে না। নানা কারণে শিশু মৃত্যু হতে পারে। সবটাই খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।” চিকিৎসায় কোনও গাফিলতির কারণে শিশু মৃত্যু ঘটেনি বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত অক্টোবর থেক এই পর্যন্ত এসএনসিইউ-তে মাত্র দুইটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বাকি শিশুগুলির মৃত্যু হয়েছে প্রসবকালীন সময়ে বা গর্ভস্থ অবস্থায় প্রসূতি বিভাগে। হাসপাতালেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশিরভাগই মৃত্যুই অপুষ্টিজনিত কারণে হয়েছে। হাসপাতালে গর্ভস্থ ও ভুমিষ্ট হওয়ার পর ১৬টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে বেশির ভাগই ছিল কম ওজনের শিশু। এক কেজি থেকে আড়াই কেজির নীচে ওজন। স্বস্থ্য দপ্তরের মতে, জন্মের সময় আড়াই কেজির নীচে কোনও শিশুর ওজন হলে তা অপুষ্টি জনিতই ধরা হয়। শিশুদের ওজন কম হওয়ার কারণ মায়ের অপুষ্টি।
প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া রিপোর্টে পূর্ব বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় জানিয়েছিলেন, জেলায় প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব হয় ৯৯ শতাংশ শিশুর। আর টিকাকরণ করা হয়েছে ১০৩ শতাংশ শিশুর (বাইরে থেকে আসা শিশুর সংখ্যা ধরে)। আবার প্রসূতি ও শিশুর পুষ্টির জন্যও জেলায় প্রকল্প চালু রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই শিশু মৃত্যুর হারও জেলায় অনেক কম বলে দাবি স্বাস্থ্য দপ্তরের।
কিন্তু সম্প্রতি কালনা মহকুমা হাসপাতালে কয়েকটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের লোকজন চিকিৎসকদের কাছে তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রবিবারও এই হাসপাতালে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রসূতি স্বপ্না মণ্ডল, চুমকি সর্দার, বিজয়া মল্লিক, মৌসুমী বিশ্বাসদের শিশুর মৃত্যু হয়েছে গত আড়াই মাসে। তাঁরা চিকিৎসকদের কাছে তাঁদেরও ক্ষোভও জানিয়েছেন। এই হাসপাতালের এসএনসিইউ বিভাগে ২০টি শয্যা রয়েছে। যার প্রতিটিতেই প্রায় ২ জন করে শিশুকে রাখতে হয়। এতটাই চাপ থাকে। রবিবার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অবশ্য জানিয়েছে, কালনা মহকুমা হাসপাতাল সম্পর্কিত তথ্য তাঁর কাছে এই মুহূর্তে নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। এক স্বাস্থ্যকর্তা অবশ্য জানিয়েছেন, শিশু মৃত্যুর হার আগের তুলনায় অনেক কমে গিয়েছে এই হাসপাতালে।
[তুষারপাত শুরু হতেই পর্যটকদের উৎসাহ বাড়ছে সান্দাকফুকে ঘিরে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.