নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: ভোঁকাট্টার খেলা বেশ ভাল লেগেছিল বছর তিনের খুদে। সেই টানে নেড়া ছাদে উঠে গিয়েছিল সে।তারপর? পাইকপাড়ার বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে একদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হার মানল শাহিন মণ্ডল।
শুক্রবার শাহিনের এগারো বছরের দাদা রোহিত ছাদে উঠে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিল। দাদাকে দেখে শাহিনও হাতে লাটাই, সুতো নিয়ে ভোঁকাট্টা করতে চেয়েছিল। কিন্তু ছোট্ট ভাইয়ের আবদারে কান না দিয়ে, তাকে ফেলেই রোহিত উঠে গিয়েছিল ছাদে। সেসময় ছাদের রোদ্দুরে বসেছিলেন মা, দিদা। সকলের অলক্ষ্যে ছোট্ট শাহিন এক পা এক পা করে পৌঁছে গিয়েছিল দোতলার নেড়া ছাদে। তারপর টাল সামলাতে না পেরে ছাদের ধার থেকে একেবারে নিচে পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। গুরুতর আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। সেখান থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। প্রায় ২৪ ঘণ্টার লড়াইয়ের পর হাল ছেড়ে দেয় শাহিন। সকলের হাত ছাড়িয়ে চলে যায় পৃথিবী ছেড়ে।
[ভাড়া নিয়ে বচসা, দিঘায় হোটেলে ঢুকে পর্যটকদের মারধর টোটো চালকদের]
বনগাঁর পাইকপাড়ার বাসিন্দা শাহিনরা। বাবা সারজুল মণ্ডল পেশায় ট্রাক চালক। দুই ছেলে, স্ত্রীকে নিয়ে সংসার মোটের ওপর শান্তিপূর্ণ। তারই মাঝে এমন একটা বিপর্যয় গ্রাস করল গোটা পরিবারকে। তিন বছরের ছেলের মৃত্যুর শোকে পাথর মা, বাবা, পরিবারের সকলে। ভাইয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে পারেনি বলেই এই পরিস্থিতি, এমনটা ভেবে কেঁদে আকুল এগারো বছরের রোহিত। শাহিনের এমন অকালে চলে যাওয়া প্রতিবেশীদের কাছেও ধাক্কার। তাঁরা জানাচ্ছেন, অত ছোট ছেলেটি পাড়ার সকলের প্রিয় হয়ে উঠেছিল। চোখে হারাতেন সবাই। এমনকি শাহিনকে সুস্থ করে তুলতে প্রতিবেশীরা যে যার সাধ্যমতো বাড়িয়ে দিয়েছিলেন আর্থিক সাহায্যের হাত। কিন্তু সবার সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে আকাশের বুকেই মিলিয়ে গেল ৩ বছরের শাহিন মণ্ডল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.