নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: তুচ্ছ কারণে আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্তের পথে হাঁটল এক নাবালিকা৷ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার চিকনপাড়া গ্রামে। মৃতার নাম ঋদ্ধিমা রায়। জানা গিয়েছে, বাবা ঘুরতে নিয়ে না যাওয়ার কারণে অভিমানে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই কিশোরী। ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়।
উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার চিকনপাড়ার বাসিন্দা রথীন্দ্রনাথ রায়। বছর তিনেক আগে রথীন্দ্রনাথবাবু ও তাঁর সন্তানকে ফেলে চলে যান তাঁর স্ত্রী। সেই থেকে মেয়েকে নিয়েই জীবন তাঁর। লেখাপড়া, খেলাধুলো সব কিছুতেই মেয়ের সঙ্গী ছিলেন তিনি। নিয়মিত বিকেলে মেয়ের সঙ্গে ঘুরতেও যেতেন তিনি। প্রতিদিনের মতোই মঙ্গলবার বিকেল হতেই বাবার সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার বায়না ধরে বছর সাতেকের ঋদ্ধিমা। কিন্তু হঠাৎই একটি কাজে আটকে পড়েন রথীন্দ্রনাথবাবু। ফলে এদিন মেয়ের সঙ্গে ঘুরতে যেতে পারেননি তিনি। উলটে মেয়েকে পড়তে বসতে বলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান তিনি।
বাবার এই আচরণ মোটেই গ্রহণ করতে পারেনি ছোট্ট ঋদ্ধিমা। বাবা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ ঠাকুমার সঙ্গে ঘরেই ছিল সে। এরপর নিজের ঘরে পড়তে চলে যায়। জানা গিয়েছে, এর বেশ কিছুক্ষণ পর রাতের খাওয়ার জন্য ঋদ্ধিমাকে ডাকাডাকি করলে সাড়া পাননি কেউ। এরপর ঘরে গিয়ে ঋদ্ধিমার ঠাকুমা দেখেন, জানলায় গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে নাতনি।
তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার চাঁদপাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। কিন্তু মৃত্যু নিয়ে চিকিৎসকদের কথা প্রাথমিকভাবে মানতে পারেনি ঋদ্ধিমার পরিবার। সেই কারণে চাঁদপাড়া হাসপাতাল থেকে দেহ নিয়েই বনগাঁ হাসপাতালে যান মৃতার পরিবারের সদস্যরা। সেখানেও চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করলে ভেঙে পড়েন কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা। ইতিমধ্যেই ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে গাইঘাটা থানার পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে মৃতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে৷ শুধু কি বাবা বেড়াতে নিয়ে যাননি বলে অভিমানে আত্মঘাতী হল ঋদ্ধিমা? নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণও আছে? সেটাই বুঝতে চাইছেন তদন্তকারীরা৷ প্রতিবেশীদের অনেকের ধারণা, আসলে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হতে চায়নি সে৷ বরং অভিমান প্রকাশের জন্য সে ওরকম ভান করছিল৷ কিন্তু আচমকা দুর্ঘটনাবশতই তার গলায় ফাঁস লেগে মৃত্যু হয়৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.