নন্দন দত্ত, সিউড়ি: সিপিএম প্রার্থীর প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে দুবরাজপুর থানার ভিতরে অবস্থান বিক্ষোভ করলেন বাম-কর্মী সমর্থকরা। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের দুবরাজপুর বিধানসভার পদুমা পঞ্চায়েতের বোধগ্রাম এলাকায়। বামেদের এই অভিযোগ যথারীতি অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
বামেদের দাবি, প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই রবিবার সকালে মিছিলের আয়োজন করে ছিলেন তাঁরা। মিছিলে ছিলেন বীরভূমের সিপিএম প্রার্থী রেজাউল করিম, স্থানীয় সিপিআইএম নেতৃত্ব ও কর্মী সমর্থকরা। অভিযোগ, বোধগ্রাম ঢোকার মুখে মিছিল আটকে দেয় তৃণমূলের বাইক বাহিনী। পথ আটকাতে সার দিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখা হয় বাইক। বাধা পেয়ে সিপিএম কর্মী, সমর্থকরা তরফে খবর পাঠান হয় দুবরাজপুর থানায়। অভিযোগ, খবর পাওয়ার প্রায় ১ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে পৌঁছান পুলিশ কর্মীরা। ততক্ষণে প্রচার মিছিল থমকে গিয়েছে৷ এমনকী পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরও কার্যত কোনও সদর্থক ভূমিকা নেয়নি, এমনই অভিযোগ স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের।
এরপরই, এলাকায় নিয়মিত কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি ও অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে দুবরাজপুর থানার ভিতরে অবস্থানে বসেন প্রার্থী রেজাউল করিম-সহ সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা। এ প্রসঙ্গে রেজাউল করিম তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এখনই এই অবস্থা হলে মানুষ তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করবে কী করে।’ তিনি বলেন, ‘সমস্ত অনুমতি নিয়েই এদিন প্রচারে গিয়েছিলাম। অথচ তৃণমূলের গুণ্ডাবাহিনী আমাদের পথ আটকানোর খবর দেওয়া সত্বেও পুলিশের দেখা মেলেনি। প্রায় এক ঘণ্টা পর পুলিশ গেলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি তাঁরা।’ বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভের পর পুলিশের আশ্বাসে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ভোলা মিত্র জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষ সিপিএমের প্রচারে বাধা দিয়েছে। তৃণমূল নয়।
জেলার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক তথা জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা জানান, ‘এক কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী জেলায় আসছে। ওই এলাকায় রুট মার্চও হবে। দুষ্কৃতী দমনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।দুবরাজপুরের দায়িত্বে থাকা সিপিএম সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাধন ঘোষের অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় একইভাবে এই দুষ্কৃতীরা এই এলাকায় তাণ্ডব করেছে। একই ছবি এবারও। এখন থেকেই এলাকায় ভোটারদের ভোটার কার্ড কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এজেন্ট হতে পারেন, এমন যুবকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠছে শাসকদলের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। প্রার্থী রেজাউল করিমের দাবি, তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি ক্রমশ সরে যাচ্ছে। সেই কারণেই তাঁরা আক্রমণ করছে সিপিএম নেতা, কর্মীদের উপর। সিপিএমের এই অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন দুবরাজপুর থানার আধিকারিকরাও।
ছবি: শান্তনু দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.