অতিমারীতে এদের কেউ হারিয়েছে বাবাকে। কেউ বা মাকে। কেউ কেউ দু’জনকেই হারিয়ে নিঃস্ব, বিপন্ন। এমন শিশুদের পাশে দাঁড়াতেই ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ও ‘ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ’র মানবিক প্রয়াস ‘আদর’। এমন শিশুদের সন্ধান জানাতে পারেন আপনিও। যোগাযোগ করুন ৯০৮৮০৫০০৪৮ নম্বরে।
অভিরূপ দাস : দু’জনের একজনও আঠারো পেরোয়নি। এরই মধ্যে তাদের চোখেমুখে মাঝবয়সের ছাপ। দশ বছরের সন্ধিতা আর তিন বছরের সান্নিধ্যর মাথায় ঢুকেছে খাবার জোগাড়ের চিন্তা।পুতুল নিয়ে খেলার বয়সে তারা ভাবছে দিন গুজরান হবে কেমন করে। তাদের মা তন্দ্রার বয়স মাত্র একত্রিশ। এই বয়সে স্বামীকে হারিয়ে তন্দ্রা দেবশর্মা ঘুরছেন পড়শিদের বাড়ি বাড়ি। কাতর অনুনয়, “কিছু সাহায্য করুন। নয়তো বাচ্চাগুলো অনাহারে রাত কাটাবে।”
চন্দননগরের (Chandannagar) নারুয়া হাউলি রথতলা এলাকার বাসিন্দা তন্দ্রারা। স্বামী সুশান্ত দেবশর্মা স্থানীয় কেবল অপারেটরের কাছে কাজ করতেন। তাঁর কাজ ছিল টাকা কালেকশন করা, মাইনে ছিল সামান্য। তবু কষ্টেশিষ্টে কেটে যাচ্ছিল দিন। কিন্তু মারণ ভাইরাস তাদের ছিমছাম জীবনে ডেকে এনেছে ভয়ংকর বিপর্যয়। করোনার ছোবলে স্বামীর অকালপ্রয়াণে আত্মীয়দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কার্যত ভিক্ষে করতে হচ্ছে তন্দ্রাকে। লজ্জা সরিয়ে রেখেই হাত পাততে হচ্ছে । টাকা জোগাড় না হলে যে মেয়ের পড়াশোনাটা বন্ধ হয়ে যাবে।
চন্দননগরের ঋষি অরবিন্দ বালকেন্দ্রম বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে সন্ধিতা। সংসারের রোজনামচা বোঝার মতো বয়স হয়নি তার। তবু সে জেনে গিয়েছে বাবা আর কোনওদিন ফিরবে না। টিভিতে করোনার খবর দেখলেই সে ডুকরে কেঁদে ওঠে। কোভিডের(Covid-19) দ্বিতীয় ঢেউ ছিনিয়ে নিয়েছে তাদের বাবা, সংসারের একমাত্র রোজগেরে বছর চুয়াল্লিশের সুশান্তকে। কোভিড আবহেও টাকা কালেকশনের কাজে বেরতেন সুশান্ত।
জুনের শুরুতে হালকা জ্বর। লালারস পরীক্ষা করাতেই দেখা যায় আশঙ্কাই সত্যি। সুশান্ত কোভিড পজিটিভ। প্রথমটায় বাড়িতেই ছিলেন। ক্রমশ নামছিল অক্সিজেন স্যাচুরেশন। দুই হাসপাতাল ঘুরে শেষমেশ তাঁকে ভরতি করা হয় ব্যান্ডেল ইএসআই হাসপাতালে। চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও ৯ জুন সব শেষ। নিথর হয়ে যায় সুশান্তর দেহ। তন্দ্রার কথায়, একদিকে অকালে স্বামীর মৃত্যু, অন্যদিকে বাড়িতে দুটো ছোট ছোট বাচ্চা। ইচ্ছে করছিল, আত্মহত্যা করি। পাড়ার লোকেরা তাঁকে বোঝায়, ভেঙে পোড়ো না। বাচ্চা দুটোর জন্য সেই থেকেই লড়াই শুরু করি।
পাণ্ডুয়ায় বাপের বাড়ি থেকে সামান্য কিছু সাহায্য পেয়েছেন। স্বামী যে সংস্থায় চাকরি করতেন তারাও দিয়েছে কিছু টাকা। কিন্তু তাতে আর ক’দিন। দু’বেলা খাওয়ার খরচ, মেয়ের স্কুলের মাইনে। মাস কাটতে না কাটতেই ভাঁড়ার ঠনঠন। অভাবের তাড়নায় বন্ধ হওয়ার মুখে সন্ধিতার লেখাপড়া। মেয়ের স্কুলে কয়েক মাসের মাইনে মকুব করার জন্য আবেদন করেছেন তন্দ্রা। ছোটছেলে সান্নিধ্যর বয়স তিন। সামনের বছর তাকে স্কুলে ভর্তি করার কথা। তন্দ্রার কথায়, যেভাবে দিন কাটছে তাতে কীভাবে কী হবে জানি না। আধপেটা খেয়ে কতদিন বাচ্চাদের লেখাপড়া চালিয়ে নিয়ে যেতে পারব ঈশ্বর জানেন।”
এই সবহারানো অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়াতে পারেন আপনিও। সরাসরি অর্থসাহায্য পাঠানো যাবে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অ্যাকাউন্টে।
State Bank of India, Ballygunge Branch,
A/C No : 30391077575
IFS Code : SBIN0003951
Mobile : 9433607740 (Debashish Maharaj)
বিঃ দ্র: টাকা পাঠানোর পর আপনার নাম,ঠিকানা ও সাহায্যের পরিমাণ স্ক্রিনশট-সহ হোয়াটসঅ্যাপ করুন 9433607740 ও 9088050048 নম্বরে। আমরা যথাসময়ে তা প্রকাশ করব। সাহায্যকৃত অর্থ 80G ধারা অনুযায়ী করমুক্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.