ফাইল ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: দুর্গাপুজো জুড়ে বৃষ্টি দিয়েছে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্ত৷ অঝোর ধারায় ভেসেছে নবমীর সন্ধ্যা৷
সামনেই কালীপুজো, দীপাবলি৷ এবারে বৃষ্টি আলোর উৎসবকেও মাটি করবে না তো? আশঙ্কিত বঙ্গবাসী৷ আর সেই আশঙ্কার মেঘ সত্যি করে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে একটি নিম্নচাপ৷ আগামী ৪৮ ঘণ্টায় যা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ হাওয়া অফিসের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-পূর্ব দিকে সরে মায়ানমার উপকূলের দিকে পা বাড়াবে৷ যা বাংলার পক্ষে শুভ৷ কিন্তু তা মায়ানমারে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই৷ পরিবর্তে নিম্নচাপটি অভিমুখ বদল করে ফিরে আসতে পারে বাংলা-বাংলাদেশ উপকূলের দিকে৷ কালীপুজোর সময়ে যদি এমনটা ঘটে তাহলে নিশ্চিতভাবে মেঘলা হয়ে যাবে বাংলার আকাশ৷ হবে বৃষ্টি৷ আর এই বৃষ্টির হাত ধরেই রাজ্যে তৈরি হতে পারে শীতের আবহ৷
ইতিমধ্যেই উষ্ণতার পারদ নেমেছে দক্ষিণবঙ্গে৷ সাতসকালেই ঘন কুয়াশা৷ ঘাসের ডগায় শিশিরের ছোট্ট বিন্দু৷ হিমেল হাওয়ার পরশ৷ জলে শিরশিরে ভাব৷ অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই শীতের আগমনি বার্তা শহরে৷ শুক্রবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি৷ সর্বনিম্ন ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি কম৷
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, স্বাভাবিক নিয়ম মেনেই এবার রাজ্যে প্রবেশ করতে চলেছে শীত৷ অপেক্ষা আর মাত্র এক মাসের৷ নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই জাঁকিয়ে শীত অনুভব করতে চলেছে দক্ষিণবঙ্গবাসী৷ উত্তরবঙ্গে যদিও এখনই ঠান্ডার পরশ মিলছে৷ গত কয়েকদিন ধরেই কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গে সকাল থেকেই শিরশিরে ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করেছে৷ প্রাতঃভ্রমণকারীদের অনেককেই দেখা গেছে হালকা চাদর গায়ে দিয়ে রাস্তায় বেরোতে৷ দিনের বেলা উষ্ণতার পারদ কিছুটা বেশি থাকলেও তা ক্রমেই নিম্নগামী রাতের দিকে৷ ভোরের দিকে ঠান্ডা বাড়লে বন্ধ করে দিতে হচ্ছে পাখা কিংবা এয়ার কন্ডিশনার৷ গায়ে টেনে নিতে হচ্ছে চাদর৷ সকালে স্নানের জল গায়ে দিতেও লাগছে শিরশিরানি৷ শীতের আগমনি বার্তা আসতেই কপোত-কপোতিরা জোড়ায় জোড়ায় ঘুরতে শুরু করেছেন দক্ষিণের লেক থেকে উত্তরের টালা পার্ক পর্যন্ত৷ শীত আসার আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে পশ্চিমের গঙ্গাপাড় থেকে শুরু করে পূর্বের সেন্ট্রাল পার্ক পর্যন্ত ঘোষিত হচ্ছে প্রেমের জয়গান৷ দেরাজের অন্ধকার কোণ থেকে ফের বেরিয়েছে হালকা গরম চাদর৷ এক বছর ধরে আলমারিতে তুলে রাখা কম্বলও রোদে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে৷
এদিকে যদিও শীত আসার আগে ঠান্ডা-গরমে কাবু হয়ে পড়েছে বাংলা৷ ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ৷ ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে জাঁকিয়ে বসেছে ভাইরাল ফিভার, ইনফ্লুয়েঞ্জা৷ বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের শারীরিক সমস্যা বেড়েছে অনেকটাই৷ ঠান্ডা-গরমে সর্দি, কাশি ভয়াবহ আকার নিয়েছে৷ আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে শহর ও শহরতলিতে দেখা দিয়েছে ভাইরাল জ্বরের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়াজনিত পেটের অসুখ৷ সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরা৷ জানিয়েছেন, এই আবহাওয়ায় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সক্রিয় হয়ে ওঠে৷ তাই, হালকা গরম জামাকাপড় গায়ে দিয়ে ভোররাতে বাড়ি থেকে বেরোতে বলছেন চিকিৎসকরা৷ জ্বরের সঙ্গে গা-ব্যথা হলেই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা৷ নিদান দিয়েছেন রক্তপরীক্ষারও৷ ঠান্ডা জাতীয় খাবার খাওয়া নিয়েও সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.