ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: মারমুখী দুশমনের আগ্রাসন ঠেকাতে নেমে হাতিয়ারেই টান! একেই বুঝি বলে, মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা! নোভেল করোনার (Corona Virus) বল্গাহীন সংক্রমণ ও মৃত্যুর জেরে সারা দেশ নাস্তানাবুদ। ফি দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)-সহ কয়েকটি রাজ্যের উদ্বেগের পারদ কয়েকগুণ চড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সাফ জানিয়ে দিল, পশ্চিমবঙ্গকে আর নিখরচায় কোভিড নির্ধারক আরটিপিসিআর (RT-PCR) কিট দেওয়া হবে না।
দেশের শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থা আইসিএমআরের (ICMR) তরফে রাজ্যকে জানানো হয়েছে, করোনা সংক্রমিত ব্যক্তির লালারস পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কিট ও ভিটিএম খোলাবাজার থেকেই স্বাস্থ্য দপ্তরকে কিনতে হবে। পরিণাম, শুধুমাত্র কিট কিনতেই রাজ্যের কোষাগার থেকে রোজ বেরিয়ে যাবে অন্তত আট লক্ষ টাকা। উপরন্তু রয়েছে লালারস সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যাওয়ার ভিটিএম (ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়াম) কেনার খরচ।
আইসিএমআরের ওই বার্তা দিন দশেক আগে আসে রাজ্য স্বাস্থ্য-সচিবের কাছে। তাতে জানানো হয়েছে, ১ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকেই আরটিপিসিআর কিট এবং লালারস সংরক্ষণের ভিটিএম রাজ্যকে কিনে নিতে হবে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তীর কথায়, “আইসিএমআরের অবস্থান জানার পর স্বাস্থ্য দপ্তর জরুরি ভিত্তিতে আরটিপিসিআর কিট ও ভিটিএম (VTM) কিনেছে।” দপ্তরের খবর, অন্তত দেড় মাসের রসদ জোগাড় হয়েছে। আরও মজুতের প্রস্তুতি চলছে। “না দিলে কিনতেই হবে। পরীক্ষা তো বন্ধ থাকবে না। তবে আগামী দিনে খরচ অনেকটাই বেড়ে গেল।” প্রতিক্রিয়া অধিকর্তার। শুধু কিট বা ভিটিএম নয়। ল্যাবরেটরিতে করোনা পরীক্ষার আনুষঙ্গিক বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র, যেমন সিপলার বা হাই সেনসিটিভ স্পেক্টমেট্রিকও এখন আইসিএমআর অনুমোদিত ভেন্ডার বা সরবরাহকারীর থেকে কিনতে হবে। সব মিলিয়ে করোনা পরীক্ষার খরচ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভেবে রাজ্য প্রশাসন ঘোর দুশ্চিন্তায়।
স্বাধীনতা দিবস থেকে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ৭০টি ল্যাবরেটরিতে দিনে গড়ে ৪০-৪৫ হাজার আরটিপিসিআর পরীক্ষা হচ্ছে। নবান্নের নির্দেশে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তার মধ্যে দিল্লির এ হেন চিঠি পেয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। স্বাস্থ্য-অর্থ বিভাগের তরফে পুরো বিষয়টি অর্থসচিবকে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। অজয়বাবু বলেন, “আইসিএমআর থেকে চারটি নির্দিষ্ট ভেন্ডারকে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। টেন্ডারের মাধ্যমে তাদের থেকেই কেনা হবে।” শুধুমাত্র সরকারি ল্যাবরেটরি বা হাসপাতাল নয়, আইসিএমআর অনুমোদিত বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবরেটরিও স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে এতদিন নিখরচায় কিট, ভিটিএম পেয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.