রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar) তৈরি হতে চলেছে রাজ্যের নতুন বিমানবন্দর। হাসিমারা বায়ুসেনা ছাউনি লাগোয়া এলাকায় জমি চেয়ে রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়েছে অসমারিক বিমান মন্ত্রক। আর তা নিয়ে এবার রাজনৈতিক তরজা শুরু হল। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি (BJP) সাংসদ জন বার্লার বিরুদ্ধে এই ইস্যুতে রবিবার তোপ দাগলেন আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল (TMC) নেতা সৌরভ চক্রবর্তী। সাংসদ ‘ভাঁওতা’ দিচ্ছেন বলে এদিন প্রকাশ্যে অভিযোগ তুললেন তিনি। বিজেপি সাংসদ অবশ্য সৌরভ চক্রবর্তীকে ‘ভাই’ সম্বোধন করে যৌথভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের বার্তা দিয়েছেন।
রবিবার সৌরভ চক্রবর্তী (Sourav Chakraborty) সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “এখানকার সাংসদকে খুঁজে পাওয়া যায় না। সংসদে আলিপুরদুয়ার নিয়ে সরব হন না। শুধু আলিপুরদুয়ারেই ফোর লেনের জাতীয় সড়কের জন্য ৩০ কিলোমিটার জমি অধিগ্রহন করে দেওয়া হয়েছে। অথচ ৩ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করতে পারে নি কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা বলে বেড়াচ্ছেন জমি পেলে তিনি এয়ারপোর্ট তৈরি করবেন। জমি পেলে নাকি তিনি আলিপুরদুয়ারে মেডিকেল কলেজ কলেজ করবেন। সাংসদ সম্পূর্ণ ভাঁওতা দিচ্ছেন। যারা জাতীয় সড়ক তৈরি করতে পারেন না তারা এয়ারপোর্ট কীভাবে তৈরি করবেন?”
গত ৩০ জুন কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লাকে (John Barla) একটি চিঠি দেন । ওই চিঠিতে হাসিমারা বায়ুসেনা ছাউনিতে অসামরিক বিমান চলাচলের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ৩৭.৭৪ একর জমি চাওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। হাসিমারা বায়ু সেনা ছাউনি থেকে অসামরিক বিমান চলাচলের প্রস্তাবের জবাবে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক। আর তার পরেই এই স্বপ্নের উড়ান নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে আলিপুরদুয়ার।
কিন্তু বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হতেই বিভিন্ন মহলে নানা জল্পনা তৈরি হচ্ছে। তবে আলিপুরদুয়ারে সাংসদ জন বার্লা বলেন, “ সৌরভকে বলব, এটা বিতর্ক করার সময় নয়। চলুন আমরা দুই ভাইয়ে মিলে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মিলে এই প্রকল্প বাস্তবে রূপ দিই। হাসিমারা থেকে যাত্রীবাহী বিমান ওঠানামা করতে শুরু করলে এই এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য সব কিছুর উন্নতি হবে। এলাকার মানুষের উন্নতি হবে। ভুটানের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে। বিতর্ক করে এই প্রকল্পের ক্ষতি করা যাবে না।”
উল্লেখ্য দীর্ঘদিন থেকে কোচবিহার বিমানবন্দর চালু নিয়ে নানান তালবাহানা হলেও বাস্তবে তা চালু হয় নি। ফলে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার মানুষদের বিমান ধরতে ছুটতে হয় সুদুর শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে। এই অবস্থায় ভুটান সীমান্ত লাগোয়া হাসিমারা বায়ুসেনা ছাউনি থেকেই অসামরিক বিমান চলাচলের প্রস্তাব উঠতেই আশার আলো দেখছে বিভিন্ন মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.