সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় সাত ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠকের পর বুধবার সকালে মেদিনীপুর কলেজ মাঠে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কর্তারা৷ জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে নিয়েঘটনাস্থলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তাঁরা৷ ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণের পর ফের সার্কিট হাউসে জেলাশাসক ও পুলিশ কর্তা এমনকি বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কর্তারা৷ মূলত, এদিন শামিয়ানা নির্মাণে কোনও গাফিলতি ছিল কি না, পরিকাঠামোয় কোনও ত্রুটি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হয়৷
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মেদিনীপুরের সভায় দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কর্তারা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে রাতেই দিল্লিকে জানিয়ে দিলেন, হাইভোল্টেজ ওই সভার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল দায়সারাভাবে। শামিয়ানা তৈরিতে সামান্যতম সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি। তার জেরেই ভেঙে পড়ে শামিয়ানা৷ ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে তদন্তে পর্যবেক্ষণের পর কেন্দ্রীয় দল ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা একের পর এক গাফিলতির নমুনা পেয়েছেন৷
আজ, বুধবার সকালে ফের কেন্দ্রীয় যুগ্মসচিব (নিরাপত্তা) আরতি ভটনাগর, এসপিজির এআইজি এস কে সিনহার নেতৃত্বে একটি দল এসে জেলাশাসক, পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সভাস্থলে অধিকাংশ সিসিটিভি কেন কাজ করেনি তা নিয়ে সরবরাহকারী সুবীর সামন্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। ইতিমধ্যেই এডিজি আইবি সিদ্ধিনাথ গুপ্তা ও ফরেনসিক টিম যায় ঘটনাস্থলে৷
নবান্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সভার দায়িত্বে ছিল এসপিজি এবং এনএসজি৷ তাদের ঘেরাটোপে সভাস্থল চলে যায় এক সপ্তাহ আগে৷ রাজ্য পুলিশকে সেখানে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি৷ মোদির নিরাপত্তায় সমস্ত রকমের সুরক্ষা বলয় তৈরি করে এনএসজি৷ প্রশ্ন উঠছে, সভার আগে কী এনএসজি জওয়নারা শামিয়ানার সুরক্ষা ক্ষতিয়ে দেখেনি? নির্মাণ গাফিলতির পাশাপাশি এনএসজির কাজেও ফাঁক রয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই৷
নবান্ন সূত্রে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিষয়। তা নিয়ে আপস করা চলে না। তবে ওই সভার ক্ষেত্রে তো রাজ্যের কোনও ভূমিকা ছিল না। পুরোটাই এসপিজি-এনএসজির হাতে। তবু যখন দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা দরকার। কেন না, মন্ডপের নকশা সভার আগের দিন হঠাৎ করেই বদলে ফেলা হয়। দ্রুত কাজ সারতে গিয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা যায়নি।
উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের মধ্যে ওই দুর্ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক কাজিয়া চলছেই। ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারের উপর গাফিলতির দায় চাপিয়ে আদালতে যেতে চলেছে বিজেপি। সরকারের তরফে অবশ্য ইতিমধ্যেই আয়োজক বিজেপি ও সংশ্লিষ্ট ডেকরেটরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সভার জন্য পুলিশের কোনও অনুমতি ছিল না বলে দাবি প্রশাসনের।
ছবি: নিতাই রক্ষিত৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.