রূপায়ন গঙ্গোপাধ্যায় ও গৌতম ব্রহ্ম : জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত করার অনুমোদন কেন্দ্রীয় সরকার দিয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে চিঠি দিয়ে এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। আর এই চিঠি নিয়েই বিতর্ক রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্ন উঠেছে, জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত করার চূড়ান্ত অনুমোদন যদি কেন্দ্রীয় সরকার দিয়েই থাকে তাহলে রাজ্য সরকারকে কেন না জানিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে জানানো হল।
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন চিঠি পাঠিয়েছেন দিলীপ ঘোষকে। সেখানে হর্ষবর্ধন লিখেছেন, “জলপাইগুড়ি হাসপাতাকে উন্নীত করে নতুন মেডিক্যাল কলেজ চালুর অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আমি আশাবাদী, আপনার নেতৃত্বে এই মেডিক্যাল কলেজ এলাকার মানুষকে চিকিৎসা সংক্রান্ত চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।” বিজেপির দাবি, সংসদের অধিবেশনে জলপাইগুড়ি হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত করার দাবি তুলেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ ও জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর তরফে একাধিকবার বৈঠকও করেছেন তারা। নতুন মেডিক্যাল কলেজ অনুমোদনের বিষয়টি জানিয়ে দিলীপ ঘোষকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর চিঠি দেওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন। শান্তনুবাবু সংসদের স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং আইএমএ-র প্রাক্তন সভাপতিও। তাঁর বক্তব্য, “এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। আমি স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে রয়েছি অথচ বিষয়টি আমিই জানতে পারলাম না। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওঁর দলকে চিঠি দিয়ে জানাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সরকার একটা দলের দলদাস হিসাবে যে কাজ করছে এই চিঠিই তার প্রমাণ। আমি গোটা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাচ্ছি।”
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, এটা নতুন কোনও বিষয় নয়। জলপাইগুড়ি-সহ রাজ্যের একাধিক জেলা হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের তরফে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কেন্দ্রীয় সরকার ও এমসিআই-কে দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে জলপাইগুড়ি হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত করার চূড়ান্ত অনুমোদন কেন্দ্রীয় সরকার দিয়েছে কী না সে খবর অবশ্য রাজ্যের কাছে নেই। অনুমোদনের বিষয়টি নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী চিঠি দিলেও রাজ্য সরকারকে দেয়নি। জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়ের বক্তব্য ছিল, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের রোগীদের শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের উপর ভরসা করতে হয়। জলপাইগুড়িতে মেডিক্যাল কলেজ হলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের উপর রোগীর চাপটাও কমবে এবং কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার থেকে জলপাইগুড়ির দুরত্বও কম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.