জ্যোতি চক্রবর্তী, বসিরহাট: তাঁর সংসদীয় এলাকায় অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে সবচেয়ে বেশি বিধ্বস্ত। শুক্রবার সেই ধ্বংসস্তূপ দেখতে এসেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। হেলিকপ্টারে এলাকা পরিদর্শনের পর বসিরহাটের অস্থায়ী হেলিপ্যাডে নেমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এবং কেন্দ্রের দুই মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরিকে নিয়ে বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদি। বসিরহাটে সেই বৈঠকে সেখানকার সাংসদ নুসরত যোগ দিতে চাইলেও, স্বামী-সহ তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। ফলে অপমানিত হয়ে তিনি ফিরে যান। এরপর অবশ্য সেই অপমান নিয়েই বসে থাকেননি অভিনেত্রী-সাংসদ। তিনি বরং দুপুরের দিকে সুন্দরবনের দুর্গত এলাকা তথা হিঙ্গলগঞ্জ, মিনাখা, হাড়োয়ায় গিয়ে বিধ্বস্ত দুর্গত মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেন। এলাকায় ত্রাণের ব্যবস্থাও করেন। সেলিব্রিটি জনপ্রতিনিধিকে কাছে পেয়ে কিছুটা আশ্বস্ত হন মানুষজন।
এদিন সাদা সালোয়ার-কামিজ, প্রিন্টেড ওড়নায় সজ্জিত হয়ে আমফান বিধ্বস্ত এলাকায় পৌঁছন তিনি। বিপর্যস্ত মানুষজনের অভাব-অভিযোগ, সমস্যার কথা শোনেন। আশ্বাস দিলেন, বিপদের দিনে তিনি পাশে রয়েছেন। আমফান বিপর্যয়ে রাজ্যকে কেন্দ্রের তরফে এক হাজার কোটি টাকা সাহায্য দেওয়া নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, কেন্দ্র-রাজ্য উভয় মিলে কাজ করুক এখন। রাজনীতি করার সময় নয়। একদিকে যেমন করোনা মহামারি, অন্যদিকে আমফান বিপর্যয়েরও শিকার বাংলার মানুষ। পাশে থাকতে হবে দল-মত নির্বিশেষে কাজ করে যেতে হবে । কে মন্ত্রী, কে নেতা, কে কাউন্সিলর-বিধায়ক, এখন এসব দেখার সময় নয় বলে মনে করেন তিনি। বাংলার এই বিপর্যয়ের মুখে মানুষের পাশে থাকতে হবে সঙ্গে কাজ করতে হবে। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
শুক্রবার হাড়োয়া, মিনাখা, সন্দেশখালির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে গিয়ে সহায়সম্বলহীন মানুষগুলোর ত্রাণের ব্যবস্থা করেন। তিনি বলেন, ”প্রথম পর্যায় আমাদের পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা, শিশুদের খাওয়ার পাশাপাশি জলবায়ুর রোগ থেকে মানুষকে সুস্থ স্বাভাবিক রাখা মূল উদ্দেশ্য। ” অন্যদিকে, করোনা সচেতনতা বার্তা দেওয়া হয় দুর্গত এলাকায় ত্রাণ শিবিরগুলো তিনি পরিদর্শন করেন। সেখানে খাবারদাবারের ব্যবস্থা করেন, দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের দাবি মেটানোর আশ্বাস দেন।
এমনিতে সেলিব্রিটি সাংসদ হলেও নিজের রাজনৈতিক কর্তব্যে অটল নুসরত জাহান। বসিরহাট এলাকার যে কোনও সমস্যায় মানুষ তাঁকে পাশে পান। তিনি নিজেও বসিরহাটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, খোঁজখবর রাখেন। কোনওরকম বিতর্ক এড়াতে তিনি সদা তৎপর। আমফান বিপর্যয়েও তাঁর সেই ভূমিকার ব্যতিক্রম ঘটেনি। তাই এবার মহা বিপর্যয়ে পড়েও জনপ্রতিনিধিকে কাছে পেয়ে কিছুটা নিশ্চিন্ত বোধ করছেন তাঁরা।
অন্যদিকে, নুসরতের অভিন্নহৃদয় বন্ধু আরেক সাংসদ মিমিও আমফান বিপর্যস্ত মানুজনের জন্য প্রার্থনা করেছেন। এদিন তিনিও বারুইপুর, সোনারপুর এবং ভাঙড়ে আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের মানুষজনের সঙ্গে দেখা করে, কথা বলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে আশ্বস্ত করলেন যে এই লড়াইয়ে সাংসদ ও তাঁর দলবল সবসময় তাঁদের পাশে আছেন। তাঁর কথায়, “আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াবই, এই বিপর্যয় ঠিক কাটিয়ে উঠব…।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.