Advertisement
Advertisement

Breaking News

CDS Bipin Rawat

‘কপ্টার ভাঙার খবরেই বুঝেছিলাম সব শেষ’, বলছেন কুন্নুর দুর্ঘটনায় নিহত বাংলার জওয়ানের স্ত্রী

সৎপাল দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, সাহসী বার্তা স্ত্রী-মেয়ের।

CDS Bipin Rawat: Family of dead jawan in Darjeeling mourns but tries to be steady after his death in Chopper crash in Tamil Nadu | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:December 9, 2021 9:04 pm
  • Updated:December 9, 2021 9:19 pm  

অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: দিনটা শুরু হয়েছিল ফোনে কথা বলে। কিন্তু বেলাশেষে যে সেই মানুষটারই মৃ্ত্যুর খবর আসবে, তা ভাবতেও পারেনি দার্জিলিংয়ের তাকদার রাই পরিবার। বুধবার তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) কুন্নুর রওনা হওয়ার আগে স্ত্রী মন্দিরা রাইকে ফোন করেছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাবিলদার সৎপাল রাই। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটে যায় সেই মারাত্মক দুর্ঘটনা। দেশের সেনা সর্বাধিনায়ক-সহ (CDS Bipin Rawat) ১৪ জনকে নিয়ে ওড়া MI-17 V5 চপারটি ভেঙে প্রাণ হারান হাবিলদার সৎপাল রাই। এই খবর এলাকায় পৌঁছতেই শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা গ্রামে। তাঁর মৃত্যুসংবাদ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর স্ত্রী-সহ ৬ বছরের কন্যা ও প্রবীণ মা। এদিকে, তাঁকে ‘বীর’ বলে ভূষিত করে শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর শোকবার্তা নিয়ে শহীদ সৎপালের বাড়িতে যান শিলিগুড়ির প্রশাসক গৌতম দেব।

নিহত সৎপাল রাইয়ের তাকদার বাড়ি

দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) তাকদা চা বাগানের মানায়দারা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন হাবিলদার সৎপাল রাই। বাড়িতে মা সন্তু মায়া রাই, স্ত্রী মন্দিরা রাই সহ ৬বছরের ছোট্ট কন্যা মুস্কান রাই রয়েছে। তার ছেলে বিক্কল রাইও সেনাতে কাজ করে বাবার সঙ্গে। দীর্ঘদিন ধরেই হাবিলদার (Havildar) সৎপাল রাই সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াতের দেহরক্ষী ছিলেন। ২০০১ সালে তিনি সেনায় যোগ দিয়েছিলেন। অবসর নেওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালে। কিন্তু তার আগেই এক ভয়ঙ্কর কপ্টার দুর্ঘটনায় বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে প্রাণ হারালেন সৎপাল রাইও।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ঘরের ভিতর আলমারির পাশে লুকিয়ে ভাল্লুক! তুমুল আতঙ্ক মালবাজারে]

বুধবার বিকেলে তাঁর মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছনোমাত্র কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী, মা ও কন্যা। তবে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে এখন তাঁরা গর্বিত। সৎপালের স্ত্রী মন্দিরা রাই বলছেন,  ”সকাল সাড়ে ৮টায় ফোনে শেষবারের মত কথা হয়েছিল। কপ্টার ছাড়ার আগে আমায় বলল তামিলনাড়ু যাচ্ছি পৌঁছে ফোন করব। কিন্তু ফোন না আসায় আমি নিজে ফোন করেও তাকে পাইনি। ভেবেছিলাম নেটওয়ার্কের জন্য ফোন পাওয়া যাচ্ছেনা। কিন্তু পরে আমার দিদি এসে বলে, কপ্টার ভেঙে পড়েছে। তখন আমি বুঝে যাই, ও আর নেই।”  এতটাই মানসিক জোর তাঁর। স্বামীর অকস্মাৎ মৃত্যুতে তিনি বলছেন, ”তবে আমি আমার স্বামীকে হারালেও গর্বিত, কারণ ও দেশের জন্য শহিদ হয়েছে। আমার ছেলেও সেনাতে কাজ করে। ও দিল্লিতেই বাবার সঙ্গে থাকত। ও আমাদের ফোন করেছিল। তবে কবে দেহ আসবে তা জানা যায়নি।” ছোট্ট কন্যা মুস্কান রাই বলেন, ”দিওয়ালিতে এসেছিল বাবা। কপ্টার ওড়ার আগে কথা হয়েছিল। কিন্তু পরে মায়ের কাছে জানতে পারি বাবার কথা। খুব মন খারাপ হচ্ছে। তবে মা বলেছে বাবা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে। তাই আমি আমার বাবার জন্য গর্বিত।”

Darjeeling
   
নিহত হাবিলদার সৎপাল রাই এলাকায় সামাজিক কাজের জন্য বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না প্রতিবেশীরাও। তার প্রতিবেশী রবিন শশাঙ্কের কথায়, ”খুব ভাল মানুষ ছিল ও। ছুটিতে এলেই সামাজিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকত। এমনকি আমাদের এলাকার যুবকদের সেনাবাহিনীতে ভরতি হওয়ার জন্য উৎসাহ দিত। ওর এরকম মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছিনা। আমরা সকলেই শোকাহত।”

[আরও পড়ুন: প্রেমিকার সঙ্গে হোটেলের ঘরে স্বামী! হাতেনাতে ধরে তরুণীকে বেধড়ক মার স্ত্রীর, ভাইরাল ভিডিও]

 এদিকে, বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শোকবার্তা নিয়ে সৎপালের বাড়িতে হাজির হন গৌতম দেব। তিনি তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের পুষ্পস্তবক দিয়ে শোক জ্ঞাপন করেন। শিলিগুড়িতে গৌতম দেব বলেন, ”এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা সৎপালের পরিবারের পাশে আছি। ” 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement