ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: ভোলে ব্যোমের পর এবার সিবিআইয়ের নজরে শিব শম্ভু রাইস মিল। সোমবার সকালে সিবিআই এবং ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিকরা ওই রাইস মিলে হানা দেন। এই রাইস মিলের অংশীদার অনুব্রতর ভাগ্নে রাজা ঘোষ, উঠছে প্রশ্ন। সেই সংক্রান্ত তথ্যের খোঁজে মিলের ভিতরে ঢুকেছেন আধিকারিকরা। রাইস মিলে চলছে জোর তল্লাশি।
সোমবার সকালে ট্রেনে চড়ে শান্তিনিকেতন স্টেশনে পৌঁছন সিবিআই আধিকারিকরা। এরপর গাড়িতে চড়ে বোলপুরের বাঁধাগোড়ার ওই রাইস মিলে আসেন তদন্তকারীরা। চার সদস্যের সিবিআই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রয়েছেন ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিকরা। ছোট নীল রংয়ের দরজায় ডাকাডাকি করেন তদন্তকারীরা। এরপর রাইস মিলের ভিতরে থাকা কর্মীদের সঙ্গে একপ্রস্থ কথা বলে ভিতরে ঢোকেন তাঁরা। শুরু হয় তল্লাশি অভিযান।
বীরভূমের বাঁধাগোড়ায় অবস্থিত শিব শম্ভু রাইস মিল। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হল, শিব শম্ভু রাইস মিলে দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বন্ধ। তা সত্ত্বেও এই রাইস মিলে বেশ কয়েকজন কর্মী ছিলেন। নিরাপত্তারক্ষীও ছিলেন। এমনকী প্রতিনিয়ত এই মিলে বেশ কয়েকজনের আসাযাওয়া লেগে থাকত বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর। মিলের দরজায় থাকা সাইন বোর্ড অনুযায়ী, জেবি পাল ও ডিডি পাল নামে দু’জনের নাম পাওয়া গিয়েছে। মিলেছে একটি মোবাইল নম্বরও। যদিও ওই নম্বরটির মাধ্যমে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। কারণ, মোবাইল নম্বরটি অস্তিত্বহীন। সূত্রের খবর, এই রাইস মিলটি লিজ নেওয়া হয়েছে অনুব্রতর দিদি শিবানী ঘোষের নামে। ব্যবসার অংশীদার হিসাবে উঠে আসছে বীরভূমের দাপুটে নেতার ভাগ্নে রাজা ঘোষের নাম।
সূত্রের খবর, রাজা শুধু এই রাইস মিল নয় আরও বিপুল সম্পত্তি রয়েছে তাঁর। ছোটবড় আরও বেশ কয়েকটি মিলের মালিক নাকি তিনি। প্রচুর জমিও রয়েছে তাঁর নামে। এছাড়া ২০১১-১৫ সাল পর্যন্ত বীরভূমে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। অনুব্রতকন্যা সুকন্যা চাকরি পান সেই সময়েই। তাঁর নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আগেই। রাজার দাবি, বোলপুরের মির্জাপুরের মোহনানন্দ রাইস মিলের ডিরেক্টর তিনি। শিব শম্ভু রাইস মিলের অংশীদার আদৌ রাজা কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। আপাতত মিলের ভিতরে ঢুকে নথিপত্রের সন্ধানে সিবিআই। কর্মীদের সঙ্গে চলছে কথাবার্তা।
গরু পাচার মামলায় ভোলে ব্যোম, শিব শম্ভু, শংকর ছাড়াও বীরভূমের ১০টি রাইস মিলের দিকে নজর রয়েছে সিবিআইয়ের। ইতিমধ্যে ভোলে ব্যোম রাইস মিলে তল্লাশি চালিয়েছেন আধিকারিকরা। সেখান থেকে একটি মোটরবাইক-সহ ৬টি গাড়ি পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে ফোর্ড এন্ডেভার গাড়ির মালিক এক ব্যবসায়ী দাবি করেছেন, টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নামে ৪৬ লক্ষ টাকা দামের ওই গাড়িটি হাতিয়েছিলেন অনুব্রত। এবার শিব শম্ভু রাইস মিল থেকে কী পাওয়া যায়, সেদিকেই নজর সকলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.