ধীমান রায়, কাটোয়া: হাই প্রোফাইল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ। কথায় কথায় তাঁদের ফোন করেই বিপাকে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের টোটোচালক অজয় দাস। ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলায় ওই টোটো চালককে তলব করল সিবিআই (CBI)। আগামী ১৬ জুন দুর্গাপুরের এনআইটি গেষ্ট হাউসে হাজিরা দিতে হবে তাঁকে।
কেতুগ্রামের সীতাহাটি পঞ্চায়েতের নৈহাটি গ্রামের বাসিন্দা বছর বিয়াল্লিশের অজয় দাস। বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা স্বপন দাস। টোটো চালিয়ে সংসার চলে অজয়ের। আগে কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে লজেন্স বিক্রি করতেন। বছর চারেক আগে বাড়ি ফিরে যান। অজয়বাবুর স্ত্রী চন্দনাদেবী মৃত্যুর পর থেকে তাঁদের মেয়ে থাকে মামাবাড়িতে। জানা গিয়েছে, অজয়ের মোবাইল হাই প্রোফাইল নেতাদের নম্বরে ভরতি। বীরভূমের অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal), রাণা সিংহ থেকে শুরু করে কলকাতার রাজ্যস্তরের তৃণমূল নেতা নির্মল মাজি, ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) আপ্তসহায়কের সঙ্গেও তাঁর পরিচয় রয়েছে বলে দাবি অজয়বাবুর। তবে নিজের প্রয়োজনে নয়, এলাকার কেউ বিপদে পড়লে তাঁদের উপকার করতেই তিনি নেতাদের ফোন করেন বলেই দাবি। কথায় কথায় নেতাদের ফোন করার এই ‘অভ্যাস’ই নাকি বিড়াম্বনায় ফেলে দিয়েছে, একথা বলছেন অজয় নিজেই।
জানা গিয়েছে, দুদিন আগে অজয়ের হোয়াটসআ্যপে সিবিআই নোটিস পাঠানো হয়েছে। তবে প্রথমে ওই নোটিস তাঁর চোখে পড়েনি। তারপর সিবিআইয়ের দপ্তর থেকে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়। অজয়বাবু বলেন, “আমি পড়াশোনা বেশি করিনি। নোটিসটি গ্রামের একজনকে দেখাই। তারপর বুঝতে পারি আমাকে একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ডাকা হয়েছে।” অজয়বাবু বলেন, “আমি তৃণমূল কংগ্রেসকে ভালবাসি। মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। তাই মানুষের উপকারের জন্য নেতাদের ফোন করতে হয়। কেষ্টদাকে, রাণাদাকে প্রায়ই ফোন করি। নির্মল মাজির সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয়। নির্মলদাকেও ফোন করি। হয়তো নেতাদের ফোন করার জন্যই আমাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ফোনের জন্যই এই ঝামেলায় আমায় পড়তে হল।”
কিন্তু বড়বড় নেতাদের অত ফোন করার প্রয়োজন হয় কেন? অজয়বাবুর কথায়, “এই ধরুন কোনও রোগীকে নিয়ে কলকাতার কোনও হাসপাতালে নিয়ে গেলে ভরতি করতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয়। তখন দেখেছি নির্মলদাকে একবার ফোন করেই কাজ হয়ে গিয়েছে। তার আগে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। তাই ফোন করি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.