প্রতীকী ছবি।
অর্ণব আইচ: গত কয়েক বছরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কয়েকটি জায়গা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন অন্তত চারজন। যা নিয়ে এবার তিনটি মামলা দায়ের করল সিবিআই (CBI)। এই মামলাগুলোর তদন্ত শুরু করেছে সল্টলেকে সিবিআইয়ের অপরাধ দমন শাখা। এই নিখোঁজ হওয়ার পিছনে মহিলা ও শিশু পাচার চক্র রয়েছে কি না, তা নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন।
জানা গিয়েছে, সুন্দরবন লাগোয়া এলাকায় পাচারচক্রের সন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। সূত্রের খবর, গত ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। ক্যানিং এলাকার আমতলার বাসিন্দা শ্যামল নস্কর অভিযোগ জানান, ওই বছরের ২২ অক্টোবর তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না নস্কর সাড়ে চার বছর মেয়েকে নিয়ে গোসাবা এলাকার শম্ভুনগরের মিত্রপুরে বাপের বাড়ি যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন। কিন্তু আর বাড়ি ফেরেননি। তাঁদের সন্ধানে ৬ নভেম্বর শ্যামলবাবু শ্বশুরবাড়িতে যান। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে জানান, তার দুদিন আগেই, অর্থাৎ ৪ নভেম্বর সকাল দশটা নাগাদ জ্যোৎস্না মেয়েকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছিলেন। তার পর থেকে বছরের পর বছর খোঁজ চালিয়েও শ্যামলবাবু স্ত্রী ও মেয়ের খোঁজ পাননি।
এদিকে, ২০১৪ সালের ৭ নভেম্বর এক মহিলা দক্ষিণ ২৪ পরগনারই জীবনতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি পুলিশকে জানান, ওই সালেরই ৬ আগস্ট তাঁর সাত বছরের ভাইঝি হঠাৎই এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। তখন থেকে পরিবারের লোকেরা ওই নাবালিকার খোঁজ চালাতে শুরু করে। সব জায়গায় তন্ন তন্ন করে খোঁজা হলেও সন্ধান মেলেনি ওই নাবালিকার। এর পরই ওই মহিলা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে জানান, তাঁর ভাইঝিকে অপহরণ করা হয়েছে।
তবে, সিবিআইয়ের দায়ের করা তৃতীয় মামলাটি একটু অন্যরকমের। গত ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর গোসাবার বিজয়নগর এলাকার বাসিন্দা নকুল পাত্র গোসাবা থানায় অভিযোগ জানান যে, তাঁর ছেলে তন্ময় পাত্রের সঙ্গে সূর্যবেড়িয়ার বাসিন্দা এক যুবতীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারই জেরে ওই যুবতীর পরিবারের তিন সদস্য তাঁদের বাড়িতে এসে হুমকি দেন। তারপরই একদিন গোসাবা বাজারে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান তন্ময়। নকুল পাত্রর অভিযোগ, ওই যুবতীর পরিবারের লোকেরাই তন্ময়কে অপহরণ করে বন্দি করে রেখেছে। এই ব্যাপারেও সিবিআই তদন্তে নেমেছে।
এই মামলাগুলো প্রসঙ্গে, সিবিআইয়ের সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত শুরুর পর জেলার নারী ও শিশুপাচার চক্রের সঙ্গে যে এজেন্টরা জড়িত, তাদের নামের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তারা মূলত মহিলাদের মোটা টাকার চাকরির টোপ দিয়ে নিয়ে যায় দিল্লি, মুম্বই, পুণে বা দেশের অন্য শহরগুলোতে । এর পর তাঁদের বিক্রি করে দেওয়া হয় যৌনপল্লিতে। এই এজেন্টদের ধরা গেলে এই নিখোঁজ রহস্যের কিনারা হতে পারে বলে অভিমত সিবিআইয়ের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.