রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পদযাত্রার পরদিনই কাঁথিতে সিবিআই হানা (CBI Raid)। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তে সাতসকালে ৩ নম্বর ব্লকের ভাজাচাউলির ২ তৃণমূল নেতা নন্দদুলাল মাইতি ও দেবব্রত পণ্ডার বাড়িতে হাজির কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে এগরা থানার বাথুয়াড়ি এলাকায় জন্মেঞ্জয় দলুই নামে এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ ছিল নন্দদুলাল মাইতিদের বিরুদ্ধে। যদিও সিবিআই-এর তালিকায় নন্দদুলালের নাম নেই। রয়েছে তাঁর ছেলে বুদ্ধদেব মাইতির নাম। এদিন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা বুদ্ধদেবকে না পেয়ে নন্দদুলালকে জেরা করার চেষ্টা করে, তবে ব্যর্থ হয়। অপরদিকে, তৃণমূল নেতা দেবব্রত পন্ডা কে না পেয়ে তার মেয়েকে জেরা করে বলে খবর। এদিকে অভিযানের খবর পেয়ে সিবিআইয়ের তালিকায় এক নম্বরে নাম থাকা কাঁথি ৩ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশচন্দ্র বেজ গা ঢাকা দিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত ৩০ মার্চ, ২০২১। উওর কাঁথির বাথুয়াড়ি এলাকার বাসিন্দা বিজেপি নেতা জন্মেঞ্জয় দোলাই কাঁথি (Contai) থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় মশাঁগা ব্রিজের কাছে তৃণমূল নেতারা তাকে মারধর করে বাইকে করে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। পরে ভাউচাউলি অঞ্চলের কাদুয়া এলাকার একটি মাঠে তার ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃত জন্মেঞ্জয় দোলাই এক সময় সিপিএম করতেন। তাই তৎকালীন সিপিএমের মারিশদার জোনাল সম্পাদক কালীপদ শিট মারিশদা থানায় বিকাশ বেজ-সহ ১১ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ৬ জন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। ৯০দিন পর তৃণমূল কর্মীরা জামিনে মুক্ত হয়। এর পর মৃত জন্মেঞ্জয় দোলাইয়ের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবি জানায়। পরবর্তীতে আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। ২১ ডিসেম্বর, ২০২১ সালে সিবিআই খুনের ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব নেয়। তার পর একাধিকবার তৃণমূল নেতাদের নোটিস পাঠানো হয়। কয়েকজন হাজিরা দিলেও কাঁথি ৩ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ বেজ হাজিরা এড়িয়ে যান। এসবের পর এবার সিবিআই আধিকারিকরাই পৌঁছে গেলেন কাঁথিতে।
ভোটের মাঝে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে সিবিআই হানার নেপথ্যে বিজেপি বলেই দাবি তৃণমূলের। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি পীযূষকান্তি পণ্ডা বলেন, “বৃহস্পতিবারের পদযাত্রা দেখে কাঁথির বিজেপি নেতারা রাতে ঘুমোতে পারেননি। তাই রাজনৈতিকভাবে না পেরে ভোট বানচাল করতে এদিন ভোরে সিবিআইকে মাঠে নামিয়েছে। এর উওর মানুষ দেবে।” পালটা কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলেন, “খুনের মামলায় সিবিআই তদন্ত করছে। জেরা করতে চেয়েছিল তৃণমূল নেতারা যায়নি। আইনি বিষয়। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.