সুব্রত বিশ্বাস ও চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায় : কয়লাপাচার কাণ্ডের চাঁইদের হেফাজতে নিতে আরও তৎপর সিবিআই (CBI)। বুধবার সকাল থেকে রাজ্যের দশটি জায়গায় একযোগে তল্লাশি চালাচ্ছেন পঁচাত্তর জন আধিকারিক। দুর্গাপুর, আসানসোল, রানীগঞ্জের একাধিক জায়গায় লালা ও বিনয় মিশ্র ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চলছে। সিবিআইয়ের সেই দলের সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।কলকাতায় আরও পাঁচটি টিম রাখা রয়েছে। যাঁরা নির্দেশ পাওয়া মাত্র কলকাতা ও শহরতলির সন্দেহজনক ব্যবসায়ীদের বাড়িতে তল্লাশি শুরু করবেন।
রানীগঞ্জের নারায়ণ নন্দা ওরফে নারায়ণ খড়্গের বাড়িতে তল্লাশি চলছে। বাড়ির বাইরে মোতায়েন রয়েছে সিআরপিএফ বাহিনী। একইভাবে বক্তা নগরে জনৈক জয়দেব ও আসানসোল বাজার এলাকায় জনৈক সুজিত নামে দুই ব্যবসায়ীর বাড়িতে অভিযান শুরু হয়েছে।
গরু পাচারে অভিযুক্ত এনামুল হককে হেফাজতে পেলেও কয়লা পাচারের চাঁইরা এখনও সিবিআইয়ের নাগালের বাইরে রয়েছেন। ফলে তথ্য প্রমাণ বেহাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। কয়লা পাচারের চাঁইদের বারবার নোটিস পাঠানো সত্বেও তাঁরা সিবিআইয়ের অফিসে হাজিরা দেননি। তাই কয়েকজনের বিরুদ্ধে লুকাউট নোটিস জারি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে তাঁরা দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন বলেও শঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাঁদের আত্মীয় ও সংস্থার ম্যানেজারের মাধ্যমে নোটিস দিয়ে ডাকা হয়েছে।তাতেও বিশেষ সাড়া দেয়নি অভিযুক্তদের কেউ-ই।
এই অবস্থায় সিবিআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে আসরে নেমে পড়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-ও (ED)। তাঁরাও অভিযুক্ত চাঁইদের না পেয়ে তাঁদের কয়েকজনের বাড়ি সিল করে দিয়েছে। উল্লেখ্য, সোমবার রাজ্যজুড়ে তল্লাশি অভিযানে চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। হাওয়ালার মাধ্যমে যে বিপুল অঙ্কের টাকা এদিক ওদিক পাচার করা হত, সেই কোটি-কোটি টাকার উৎস সন্ধানে তৎপর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। পাশাপাশি, মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার খোঁজেও কোমর বেঁধে নেমেছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।
সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স থেকে প্রায় ১৫টি গাড়িতে রাজ্যের একাধিক জায়গায় অভিযানে নামেন ইডির আধিকারিকরা। লালা ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্যবসায়ী গণেশ বাগাড়িয়ার বাঙুর, লেকটাউনের তিনটি বাড়িতে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। অন্যদিকে গড়িয়া, শ্রীরামপুর, রানিগঞ্জ, আসানসোলের ইসিএল কর্মী এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ীর বাড়িতেও কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা হানা দিয়েছিলেন বলে খবর।
সূত্রের খবর, কয়লা পাচারের সঙ্গে বাংলার রাজনীতি মহলের একাধিক রাঘব বোয়াল জড়িত। টাকার ‘গমন পথ’ ধরে সেই আঁতাঁত প্রকাশ্যে আনার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। ভোটের আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এই তৎপরতায় রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও সমালোচনা শুরু হয়েছে।
এদিকে এদিন গরুপাচারের জন্য বিএসএফের নিষ্ক্রিয়তাকে কাঠগড়ায় তুললেন তৃণমূল নেতা সৌগত রায়। তাঁর কথায়, “বিএসএফ নজর দিচ্ছে না বলেই গরু পাচার হচ্ছে। অমিত শাহ কোনওদিকে নজর দিচ্ছেন না। শুধু আসছেন, যাচ্ছেন আর ব়্যালি করছেন।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.