অনুব্রতর কালীর বিপুল গয়না। ফাইল ছবি।
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) প্রতিমার গয়নার দিকে এবার নজর দিল সিবিআই। বোলপুর তৃণমূলের (TMC) জেলা কার্যালয়ে প্রতি বছর ধুমধাম করে কালীপুজো করতেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি। কোটি কোটি টাকার স্বর্ণালঙ্কারে প্রতিমাকে তিনি সাজাতেন নিজের হাতে। প্রতি বছর বেড়ে চলত সোনার বহর। সিবিআইয়ের (CBI) কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, ৫৭০ ভরি সোনার গয়না পরানো হত। যা প্রায় সাড়ে ছ কেজি সোনা, বাজারমূল্য সাড়ে তিন কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার সিবিআই বোলপুরের অস্থায়ী শিবিরে দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও ছ’জন ব্যাংক কর্মীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকে যান নথি সংগ্রহের জন্য।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল শিবভক্ত হলেও কালীপুজো ছিল তাঁর ব্র্যান্ড। দলীয় দপ্তরে
‘কেষ্টর কালী’ নামে পরিচিত সেই পুজো তার গ্ল্যামার দেখতে ভিড় বাড়ছিল প্রতি বছর। কালীর (Kali) বিগ্রহে দামি জরির শাড়ির সঙ্গে গয়নার যুগলবন্দি ছিল দেখার মত। কালী পুজোর আগে প্রতি বছর অনুব্রত মণ্ডল তাঁর বাসনা অনুযায়ী মাকে স্বর্ণালঙ্কারে সাজাতেন। বিগ্রহের গায়ে নানা গয়না দিতেন। নাকের নথ,গলার হার, কানের পাশা, হাতের চুরি – নিজের হাতে পুজোর আগেই পরাতেন। তার আগে
সাংবাদিকদের ডেকে সেই বছর মাকে কী কী গয়না দিলেন, তা দেখাতেন।
সেই সূত্রে গত বছর বিধানসভা নির্বাচন জিতে মাকে আড়াইশো ভরি সোনার গয়না দিয়েছিলেন অনুব্রত। যার জেরে ২০২০ সালে ৩২০ ভরি সোনার গয়না বেড়ে গত বছর দাঁড়ায় ৫৭০ ভরিতে। কিন্তু কারা দিতেন এই গয়না? কোথা থেকে আসত সেগুলি? তার সন্ধানে বৃহস্পতিবার বোলপুরের স্টেশন রোডের দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী সংস্থা। শান্তিনিকেতনের রতনকুঠিতে সি বি আইয়ের অস্থায়ী শিবিরে দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ী হাজির হন। সম্পর্কে তারা বাবা ও ছেলে।
সিবিআই সূত্রের খবর, তাঁদের কাছে গয়না তৈরির রসিদ দেখতে চান তারা। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ব্যবসায়ীরা জানান, তদন্তকারী সংস্থা তাদের কাছে কিছু কাগজ চেয়েছিল। তা তারা দিয়েছেন।একইভাবে অনুব্রত মণ্ডলের আত্মীয়দের বেশ কিছু অ্যাকাউন্টের এদিন হদিশ পেয়েছে সিবিআই। সেই সূত্রে বোলপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ও দুটি বেসরকারি ব্যাংকের ছয় কর্মীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.