রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: ১৫ ঘণ্টা টানা জেরা ও তল্লাশির পর বিধায়ক তাপস সাহার বাড়ি থেকে বেরোলেন সিবিআই আধিকারিকরা। তেহট্টের তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে বেশ কিছু নথিপত্র এবং দু’টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। “রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার”, সিবিআই চলে যাওয়ার পর তাপসের গলায় অভিমানের সুর।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ নদিয়ার কড়ুইগাছিতে বিধায়কের বাড়িতে পৌঁছয় সিবিআই। ন’জন আধিকারিক বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়েন। বিধায়কের বাড়ির মূল দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাঁর বাড়ি এবং কার্যালয় ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। শুরু হয় জোর তল্লাশি। বেডরুম, কার্যালয়, পুকুরের আশপাশে তল্লাশি করেন সিবিআই আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, একটি বন্ধ লফট থেকে কমপক্ষে ৬৭টি নথি বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। দু’টি মোবাইলও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে বেতাইয়ের কলেজেও যান সিবিআই আধিকারিকরা। সেখানেও বেশ কিছু নথিপত্র ঘেঁটে দেখে সিবিআই। এরপর গভীর রাতে তাপস সাহাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফেরেন আধিকারিকরা। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। ভোরে বিধায়কের গাড়িতেও চলে জোর তল্লাশি। এরপর সকাল ছ’টা নাগাদ বিধায়কের বাড়ি থেকে বেরন আধিকারিকরা। তারপর সিবিআই বিধায়কের প্রাক্তন আপ্ত সহায়কের বাড়িতেও যান। তাপস ‘ঘনিষ্ঠ’ তৃণমূল নেত্রী ইতি সরকারের বাড়িতেও তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই।
টানা প্রায় ১৫ ঘণ্টা সিবিআই জেরা এবং তল্লাশির পর স্বাভাবিক ছন্দে তৃণমূল বিধায়ক। মোবাইল কেনেন তিনি। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতেও দেখা যায় তাঁকে। তেমন কোনও প্রমাণ না পাওয়ায় সিবিআই আধিকারিকরা খানিক হতাশ হয়েছেন বলেই দাবি বিধায়কের। তিনি বলেন, “পুরো বাড়ি ওরা দেখে নিয়েছে। নিট ফল জিরো। দু’টি মোবাইল। ছেলের কাগজ নিয়ে গিয়েছে। ভাইঝির কাগজপত্র। ওদের তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে রাত ১০টায়। কলেজে কোথায় কোথায় যেতে হবে তা ফোনে নির্দেশ আসছে। সিবিআই সেই অনুযায়ী কাজ করছে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত নথিপত্র দেখেছে। কিছু পায়নি। ওরা হতাশ হয়েছে।”
আপ্তসহায়ক তাঁকে প্রতারণা করেছে বলেও অভিযোগ তাপসের। রাজনৈতিক চক্রান্তের কথা আরও একবার বলেন তাপস। তাঁর দাবি, তিনি রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। সিবিআইও সেকথা বলেছে তাঁকে। দিনকয়েক ধরে দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাপস সাহা। প্রশ্ন উঠছে, তবে কী দলবদলের কথা ভাবছেন তৃণমূল বিধায়ক? তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছেন তাপস।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.