রাহুল চক্রবর্তী: পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ভাগাড় কাণ্ডে সরগরম রাজ্য। শাসকদলের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে বিরোধীরা। কিন্তু, পচা মাংস বিক্রির ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন রাজনৈতিক দলের কর্মীরাও। একই অবস্থা ভোটকর্মীদেরও। পঞ্চায়েত ভোটে দিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বুথ এজেন্ট কিংবা বুথের বাইরে রাজনৈতিক দলের ক্যাম্পে যাঁরা বসবেন, এমনকী ভোটকর্মীদের খাবারের প্যাকেটেও মাংস থাকবে না।
[ভাগাড়ের জীবাণু বাড়াচ্ছে আত্মহত্যার প্রবণতাও]
সকলকে তো আর ভোটে প্রার্থী করা সম্ভব নয়। দলের প্রতীকে নির্বাচনে লড়েন একজনই। কিন্তু তাঁকে জেতাতে লড়িয়ে দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। শুধু প্রচার করাই নয়, ভোটের দিনে তাঁদের দায়িত্ব কম নয়। কেউ বুথে এজেন্ট হিসেবে বুথে বসেন, কেউ আবার বুথে বাইরে দলের ক্যাম্পে বসে ভোটারদের নানাভাবে সাহায্য করেন। আর থাকেন ভোটকর্মীরা। ভোট পরিচালনা করেন তাঁরা। সকলের জন্য বরাদ্দ থাকে খাবারের প্যাকেট। দলের কর্মীদের খাবার ব্যবস্থা করেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। আর কাজের ফাঁকে ভোটকর্মীদের যাতে খাওয়া-দাওয়ার কোনও সমস্যা না হয়, সেটা দেখে নির্বাচন কমিশন। মেনুতে মাংস মাস্ট। কিন্তু, ভোটের দিন খাবারের সেই চিরাচরিত মেনুকেই ওলটপালট করে দিয়েছে ভাগাড়কাণ্ড। রাজ্যের একাধিক জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এবার ভোটকর্মীদের খাবারের প্যাকেটে মাংস থাকবে না। উত্তর ২৪ পরগনার এক নির্বাচনী আধিকারিক বলেছেন, ‘ভোটের দিন জেলায় প্রায় চার হাজার খাবারের প্যাকেটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু, মাংস বা মাংসের কোনও পদ নয়, খাবারের প্যাকেটে থাকবে ডিম-ভাত কিংবা মাছ-ভাত।’
[ভাগাড় কাণ্ডে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার ৮০ কেজি পচা মাংস, হাওড়ায় বিক্ষোভ বিজেপির]
রাজ্যে জুড়ে ভাগাড়ের মাংসের রমরমা ব্যবসায় আতঙ্কিত শাসক ও বিরোধী দলের নেতারাও। তাঁরা জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত ভোটে অন্তত মাংসকে ‘খাবার’ বলে ধরা হচ্ছে না। নারায়ণগড়ের তৃণমূল বিধায়ক প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, ‘বিধানসভা ভোটেও মাংস-ভাতের ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু এই ভোটে সেই সম্ভাবনা নেই। মাছ-ভাতের প্যাকেট করারই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বড়জোর ডিম-ভাত হতে পারে।‘ মুর্শিদাবাদে আবার দলের কর্মীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করার ঝুঁকিই নিতে চাইছে না কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের বিধায়ক আবু তাহের খান আবার জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রতিটি বুথে কর্মীদের খাওয়ার জন্য টাকা দিয়ে দেব। তাঁরাই নিজেরাই খাবারের প্যাকেটে ব্যবস্থা করে নেবে। তবে প্যাকেটে মাংস না রাখার নির্দেশ দিয়েছি।’ বড়জোড়ার সিপিএম বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘বামপন্থী দলে খাবারের এলাহি প্যাকেটের কোনওদিনই ব্যবস্থা করা হয় না। আর এবার তো ভাগাড়কাণ্ডের পর নয়ই। ডিম-ভাত না হলে রুটি-তরকারি হবে।‘ সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, এবারের পঞ্চায়েত ভোটে অন্তত মাংস মুখে তুলবেন না রাজনৈতিক দলের কর্মী ও ভোটকর্মীরা।
[সিপিএমের সন্ত্রাসের বলি করিমপুরের আনিসুরের মেয়ে জয়ী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.