ছবি: জয়ন্ত দাস।
ধীমান রায়, কাটোয়া: ফের ভাগাড় কাণ্ডের ছায়া। এবার বর্ধমানে৷ ট্রেনে চাপিয়ে পচা খাসি ও গোমাংস পাচার করতে গিয়ে রেল পুলিশের হাতে ধরা পড়ল এক ব্যক্তি। শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ গুসকরা স্টেশনে রেল পুলিশ প্রায় ৬০ কেজি পচা মাংস-সহ এক যাত্রীকে আটক করে। রেল পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের নাম মিরাজউদ্দিন শেখ (৪৫)। বাড়ি বীরভূম জেলার লাভপুর থানার পুসুলিয়া গ্রামে। বর্ধমান থেকে দুটি বস্তায় প্রায় ৬০ কেজি মাংস আমোদপুরের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিল বলে জেরায় জানিয়েছে মিরাজউদ্দিন। গুসকরা থেকে ওই যাত্রীকে বোলপুরে নিয়ে যায় আরপিএফ। জেরার পর অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে রেল পুলিশ সূত্রে খবর৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে বর্ধমান স্টেশন থেকে ছেড়েছিল তিনপাহাড়ি প্যাসেঞ্জার৷ জানা গিয়েছে, দুটি বস্তায় প্রায় ৬০ কেজি মাংস নিয়ে মিরাজউদ্দিন বর্ধমান স্টেশনে ট্রেন ধরে। যে কামরায় সে চেপেছিল সেই কামরায় আরও অনেক যাত্রী ছিলেন। রেল যাত্রীরা জানিয়েছেন, বর্ধমান স্টেশনে ওই কামরায় ওঠার পরেই অন্যান্য যাত্রীরা প্রচণ্ড দুর্গন্ধ পাচ্ছিলেন। তাণরা দুর্গন্ধের উৎসের হদিশ করতে গিয়ে দেখতে পান, শৌচাগারের সামনে দুটি বস্তায় রয়েছে পচা মাংস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পচা মাংস দেখতে পেয়েই যাত্রীরা মিরাজউদ্দিনকে সেখান থেকে বস্তা সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলেন। তা নিয়ে ট্রেনে বচসা চলতে থাকে। ট্রেনটি ততক্ষণে বনপাশ স্টেশনে এলে মিরাজউদ্দিন সঙ্গে অন্যান্য কয়েকজন যাত্রীর হাতাহাতি শুরু হয়। তখন অন্যান্য যাত্রীরা সেই কামরা থেকে নেমে পাশের কামরায় চলে যায়। খালি কামরায় একাই আসছিল মিরাজউদ্দিন। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে যাত্রীদের পক্ষ থেকে টোল-ফ্রি নম্বরে রেল পুলিশকে অভিযোগ জানানো হয়৷ গুসকরা স্টেশন ম্যানেজারের কাছে হাওড়া থেকে নির্দেশ আসে বিষয়টি দেখার জন্য। গুসকরা স্টেশনে ট্রেনটি ঢুকতেই আটক করা হয় মিরাজউদ্দিনকে। রেল পুলিশের আধিকারিক বিএন গড়াইয়ের তত্বাবধানে অভিযুক্তকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।
[অসতর্ক হয়ে লাইন পারাপার, যাত্রীদের মিষ্টিমুখ করিয়ে সচেতনতার বার্তা]
জানা গিয়েছে, ওই ৬০ কেজি মাংস নুন ও হলুদ মাখিয়ে বস্তায় ভরে মিরাজউদ্দিন নিয়ে যাচ্ছিল। তার মধ্যে একটি বস্তায় খাসির মাংস ও অপরটিতে গোমাংস ছিল বলে জেরায় জানিয়েছে অভিযুক্ত। তিনি রেল পুলিশকে জানিয়েছেন, আমোদপুরে ওই মাংসের বস্তা দুটি নামিয়ে একজনের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। তার বিনিময়ে ২০০ টাকা পেতেন তিনি। তবে, রেল পুলিশের ধারণা আমোদপুর বা বোলপুরের কোনও হোটেলে ওই মাংস বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ঘটনার তদন্তে নেমেছে রেল পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.