Advertisement
Advertisement

Breaking News

জ্বালানি-যন্ত্রণার জের, গাড়ি গ্যারাজে রেখে গণপরিবহণেই আস্থা গাড়িবাবুদের

জ্বালানি তেলের দামের জ্বালায় গাড়ির সংখ্যা দ্রুত কমছে।

Car owners opt for public transport as fuel prices shoot skywards
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 30, 2018 11:27 am
  • Updated:May 30, 2018 11:27 am  

তরুণকান্তি দাস: উন্নাসিকতায় ইতি৷ গণপরিবহণে নাক সিঁটকানো বাবুরা দৌড়ে বাস ধরছেন। ছুটছেন মেট্রো ধরতে। তাও বেশি রাতে এই শহরে মেট্রো চলে না। জ্বালানি তেলের দামের জ্বালায় গাড়ির সংখ্যা দ্রুত কমছে। রাতের বাস তো প্রায় অমিল। দাম বাড়ায় বিক্রি কমেছে পেট্রল, ডিজেলের। সবমিলিয়ে বদলে দিয়েছে ছবিটা। বেসরকারি গাড়ি তো বটেই, রাস্তায় ট্যাক্সির সংখ্যাও কমেছে অনেক। রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রে পরিবহণের মেরুদণ্ড ট্রাক ও লরির ভাড়া চড়ছে রোজই। দুর্গাপুর, আসানসোল বা হলদিয়ার মতো শিল্পাঞ্চল পরিবহণের অভাবে ধুঁকছে। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, শিল্পে মন্দা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তীব্র। এরই মধ্যে পাম্প ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে রাজ্যে।

কয়েকমাসে পেট্রলের দাম বেড়েছে সাড়ে আট টাকা। ডিজেলের দাম বেড়েছে সাড়ে নয় টাকা। বিজেপি সরকারের আমলে ডিজেলে কর বেড়েছে ৩৩০ শতাংশ। ২০১৩ সালের অক্টোবরের শুরুতে ডিজেল বিকিয়েছে ৫২ টাকা ৫৪ পয়সায়। সেখানে আজ বুববার ৮০ টাকা ৪৭ পয়সা৷ যার প্রভাব পড়ছে জনজীবনে এবং নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রীর উপর। সবচেয়ে বেশি ভুগছে শিল্পাঞ্চল।

Advertisement

শিল্পমহল সূত্রে খবর, হলদিয়ার একাধিক কারখানায় কাঁচামালের জোগানে যেমন সমস্যা হচ্ছে তেমনই উৎপাদিত পণ্য ঠিকমতো সরবরাহ করা যাচ্ছে না। একই অবস্থা বাঁকুড়ার বড়জোড়া, বর্ধমানের দুর্গাপুর-আসানসোল শিল্পতালুকগুলিতে। ইস্পাত শিল্পে ভিনরাজ্যের কাঁচামাল আসছে না। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। দাম বাড়ার আশঙ্কাও প্রবল। রাজ্যে ইস্পাত কারখানা মালিক সংগঠনের দাবি, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ইস্পাতের দাম পাঁচ শতাংশ বাড়বে।

কলকাতার ছবিটা বদলে গিয়েছে হঠাৎ। রাতের দিকে যাত্রী কম থাকায় জ্বালানির দাম ঘরে তোলাই কষ্টসাধ্য। তাই দশটার পর বাস কমেছে অনেক। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের যুগ্ম সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “খরচ না উঠলে বাস চলবে কী করে? বাস্তবটা তো অস্বীকার করা যায় না।” কলকাতায় ট্যাক্সির বাড়তি ভাড়া চাওয়া নতুন কিছু নয়। কিন্তু এখন একটু দূর শহরতলি হলেই ট্যাক্সি চালক সরাসরি যাত্রী প্রত্যাখ্যান করছেন অথবা অস্বাভাবিক ভাড়া চাইছেন।

কিন্তু এখানেও চুপিসাড়ে আর একটা সামাজিক পটপরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়েছে পেট্রল-ডিজেল। ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়ি অনেক কমে গিয়েছে। ফলে যাঁরা বাঁকা চোখে দেখতেন গণপরিবহণকে, তাঁরাই এখন মাঝ দরিয়ায় খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরছেন সরকারি, বেসরকারি বাস। ভিড় বাড়িয়ে কলকাতার এসি বাস এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় পরিবহণ, যার আয় বেড়েছে কয়েকগুণ।

এদিকে রাজ্যের তথ্য বলছে, ছোট গাড়ি অনেক কমেছে। বিশেষ করে দু’চাকার যান পেট্রোল পাম্পে কম আসছে বলেই খবর। কমেছে জ্বালানির বিক্রিও। পেট্রোল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তুষার সেন বলেছেন, “আমাদের বিনিয়োগ বেড়েছে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ। কিন্তু বিক্রি কমেছে। গত কয়েকদিনে প্রায় ২৫ শতাংশ বিক্রি কমেছে। দাম আরও বাড়লে বিক্রি কমবে। মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।” রাজ্যে প্রায় তিন হাজার পেট্রল পাম্প রয়েছে। যতই চড়চড়িয়ে বাড়ছে দাম, সেগুলিতে গাড়ির লাইন কমছে দ্রুত। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কমায় সমস্যায় মানুষ। এবং এর থেকে এখনই যে মুক্তি মিলবে না তা স্পষ্ট৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement