চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: রেল সুরক্ষায় ওরা তিনজনই এখন ভরসা আসানসোলে। গোয়ালিয়র থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ শেষ করে ইতিমধ্যে কাজে যোগও দিয়েছে তারা। পরীক্ষামূলকভাবে সদ্য শেষ হওয়া শ্রাবণী মেলার ভিড় কৃতিত্বের সঙ্গে সামলে দিয়েছে তারা। পরীক্ষায় উতরে যাওয়ার পর পাকাপাকি চাকরিতে বহাল হল ওরা। ওরা আসলে তিনটি পুলিশ কুকুর। নাম কোকো, জাভা আর জোজো। বোমা ও অত্যাধুনিক বিস্ফোরক চিহ্নিতকরণে ওরা বিশেষজ্ঞ। তাই যাত্রী সুরক্ষায় ওদের ওপরই এখন ভরসা রাখছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন।
তিন রাজ্যের অন্যতম রেল সংযোগ ও গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন ওই আসানসোল। তাই বরাবরই জঙ্গিদের সন্ত্রাসের অন্যতম নিশানা ওই আসানসোল রেল স্টেশন। গত কয়েক বছর ধরে বার বার নাশকতার শিকার হয়েছে দেশের বিভিন্ন রেলস্টেশন ও রেলের লাইন। রেল তাই নিজস্ব কুকুর প্রতিপালন কেন্দ্র গড়ে তুলেছে। যেখানে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে কুকুরদের। বিস্ফোরক, মাদক, অপরাধীকে খুঁজে বের করতে তৈরি হয়েছে রেলের নিজস্ব স্নিফার ও ট্রাকার ডগ ফোর্স। কোকো, জাভা আর জোজো হল সেই ফোর্সের সদস্য।
কোকো, জোজো আর জাভা নামক তিন ল্যাবরাডর প্রজাতির কুকুরের জন্মভূমি আসানসোলেই। ছ’মাস বয়সেই তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে পাঠানো হয়েছিল। সঙ্গে ছিলেন আরপিএফ-এর ছয় জওয়ান। রেল পুলিশে এএসআই এসকে সিং, হেডকোয়ার্টার ডিসি মণ্ডল ও কনস্টেবল এ বাউরিকে ওই তিনজনের হ্যান্ডেলার্সের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের সঙ্গে সহায়ক হিসাবে যান আরও তিনজন। কোকোদের প্রশিক্ষণ শেষে সবাই যে যার কর্মস্থলে ফিরে গিয়েছেন। আরপিএফ সিআইবি ইন্সপেক্টর তথা ডগ স্কোয়াডের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাসুকিনাথ জানান, “আসানসোলে রেলের পাঁচটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্নিফার কুকুর আগে থেকেই ছিল। তার মধ্যে এই তিনটি কুকুরকে বম্ব ও বিস্ফোরক ট্র্যাকিং-এর প্রশিক্ষণের জন্য মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে পাঠানো হয়েছিল। প্রশিক্ষণ শেষে এবার চাকরিতে বহাল করা হয়েছে তাদের।
শ্রাবণী মেলার জন্য বৈদ্যনাথ ও বাসুকিনাথে দায়িত্বে ছিল কোকো, জাভা ও জোজোরা। রেলের ছোট-বড় লাগেজে গন্ধ শুঁকে এরা সতর্ক করে দেয় হ্যান্ডলার্সকে। শুধু স্টেশন চত্বর নয়, রেলের বিভিন্ন কামরায় এদের দিয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছে। ভিআইপি মুভমেন্টের ক্ষেত্রেও বড় দায়িত্ব থাকবে এদের। এছাড়া, সিনিয়র ডিএসসির অনুমতি সাপেক্ষে রাজ্য পুলিশ তাঁদের প্রয়োজনে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই তিনটি সারমেয়কে নিয়ে যেতে পারেন নিজস্ব তদন্তের কাজে।”
উল্লেখ্য, আসানসোল স্টেশন দিয়ে দৈনিক ভিআইপিরা যাতায়াত করেন। ফলে এই স্টেশনটি সব সময় জঙ্গীদের যেমন হিট লিস্টে থাকে। ঠিক একইভাবে নিরাপত্তা কর্মীরাও ওই স্টেশনের নিরাপত্তায় ২৪ ঘণ্টা সদা সতর্ক বলে দাবি করা হয়েছে। এই মুহূর্তে রেলের ডগ স্কোয়াডে মাত্র ৩৩২টি কুকুর আছে। কিন্তু ছাড়পত্র রয়েছে ৪৫৯টি কুকুর রাখার। তবে এই সংখ্যাটা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই নগণ্য বলে দাবি রেল পুলিশের।
[বন্ধ ঘর থেকে যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার, চাঞ্চল্য মালবাজারে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.