Advertisement
Advertisement
গঙ্গা থেকে মরণঝাঁপ

মর্মান্তিক! বন্ধুকে ‘টা-টা’ করেই ব্রিজ থেকে গঙ্গায় মরণঝাঁপ যুবকের

রেখে গিয়েছেন ৩ বছরের সন্তান এবং স্ত্রীকে।

Cancer surviver commited suicide due to the bad physical condition
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:December 27, 2019 9:24 am
  • Updated:December 27, 2019 9:25 am  

সুব্রত বিশ্বাস: তাঁকে ‘টা-টা বাই-বাই’ করে, দুনিয়া থেকেই যে চিরবিদায় নেবে বন্ধু এটা একবারও বিশ্বাস করতে পারেননি সালকিয়ার রীতেশ বর্মা। তবে এটাই বোধহয় ছিল বিধির লিখন। হরিহর আত্মার বিয়োগান্ত পরিণতিকে এভাবেই ব্যাখা করলেন রীতেশ।

বৃহস্পতিবার সালকিয়ার বাড়ি থেকে স্ত্রীকে ‘সাইটে যাচ্ছি’ বলে বেরিয়ে যান প্রোমোটার রাজকুমার সোনকার। একই সাইটে ফ্ল্যাট তৈরির কাজ দেখতে এসে বন্ধুর দেখা পাননি প্রোমোটার রীতেশ। এরপর রাজেশের মোবাইলে ফোন করেন তিনি। সুইচ অফ শুনে বন্ধুর স্ত্রীকে ফোন করে জানতে পারেন, সাইটে আসার নাম করেই তিনি বেরিয়েছেন। সন্দেহের উদ্রেক হয় রীতেশের। একান্তে বন্ধুকে দুঃখের কথা বলেছিলেন। আর বাঁচতে চাই না। এভাবে বেঁচে থাকা যায় না। শরীরে ক্যানসার বাসা বেঁধেছে। সে বাসা হয়তো ভাঙবে না।

Advertisement

[আরও পড়ুন: যুবক খুনের ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা কল্যাণীতে, থানার সামনে জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ ]

রীতেশের কথায়, জিভে কর্কট রোগ হওয়ায় ছ’মাস আগে অপারেশন হয় তাঁর। ৩০ রেডিয়েশন নেওয়াও হয়েছে। ইদানীং গলার ভিতরে প্রচণ্ড যন্ত্রণা অনুভব করায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন রাজকুমার। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে প্রোমোটিং সাইটে যাওয়ার নাম করে উধাও হয়ে যান। সুইচ অফ জেনে গোলাবাড়ি থানায় মিসিং ডায়েরি করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। এরপর হাওড়া কারশেড এলাকায় লাইন তন্নতন্ন করেও খোঁজ মেলেনি। দুপুরে হঠাৎই মোবাইল খোলায় রীতেশ ফোন করে তাঁকে পেয়ে যান। প্রথমে কোথায় তা না জানালেও পরে জানান, দক্ষিণেশ্বর ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন। রীতেশ তাঁকে বোঝান, তিনি সেখানে আসছেন। কথা বলতে চান।

রাজকুমারকে বলেন, “বাড়িতে তিন বছরের মেয়ে রয়েছে, রয়েছেন স্ত্রী ও বৃদ্ধ বাবা। হঠকারী সিদ্ধান্ত যেন না নিয়ে নেন। অপেক্ষা করতে বলেন তাঁর আসা অবধি। এরপর রীতেশ বন্ধুদের নিয়ে বালি ব্রিজের কাছে পৌঁছন। বন্ধুদের নিচে দাঁড় করিয়ে রেখে রীতেশ এগিয়ে যান রাজকুমারের দিকে। রাজকুমার তখন তিন নম্বর পিলারের ঠিক উপরে দাঁড়িয়ে। বন্ধুকে এগিয়ে আসতে দেখে হাত নাড়েন, ‘‘টা-টা বাই-বাই, চললাম ভাল থাকিস। এই বলেই ব্রিজের উপর থেকে সরাসরি গঙ্গার মাঝখানে ঝাঁপ দেন রাজকুমার। নিচে তখন অথৈ জলের তোড়। তাঁকে আর দেখা যায়নি। সাঁতার না জানায় তলিয়ে যান।”

[আরও পড়ুন: অকাল বৃষ্টিতে ভিজল রাজ্য, মেঘ কাটলেই জাঁকিয়ে শীতের পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের ]

অন্যদিকে তাঁর কাছ থেকেই জানা যায় যে, বালি থানা সাঁতারু নামানোর চেষ্টা করলেও সফল হয়নি। কারণ, ২৪ ঘণ্টা আগে দেহ ভেসে ওঠার সম্ভাবনা নেই। রীতেশ বলেন, “সব শেষ হয়ে গেল। বছর পাঁচেক ধরে প্রোমোটারি ব্যবসায় নেমেছিলাম আমরা। শক্ত জমি পাওয়ার আগেই স্তম্ভটা ভেঙে পড়ল।” শুক্রবার নৌকা নিয়ে সন্ধান চালাবেন তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, জলের তোড় থাকায় রাজকুমার সোনকারের দেহের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement