ক্যানসার আক্রান্ত সৈয়দ নজরুল ইসলামকে শংসাপত্র দিচ্ছেন সাংসদ কীর্তি আজাদ
অর্ক দে, বর্ধমান: রাজধর্মের পাঠ সেই ২০০২ সালে পড়িয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। তবে রাজধর্মের বাস্তব প্রয়োগ আজও অধরা বিজেপিতে! অতীতের গুজরাট ছাড়িয়ে সেই ছবিটা এবার ধরা পড়ল এই বাংলায়। ক্যানসার আক্রান্তের সাহায্যের আর্তি শুনে মুখের উপর ‘দরজা বন্ধ’ করলেন এলাকার বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। অভিযোগ তুললেন, রোগী তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে ফলে মিলবে না প্রধানমন্ত্রী রিলিফ ফাণ্ডের জন্য শংসাপত্র। অন্যদিকে, নিজের সংসদীয় ক্ষেত্র না হওয়া সত্ত্বেও ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর ‘ত্রাতা’ হয়ে এগিয়ে এলেন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ।
পূর্ব বর্ধমানের খন্ডঘোষ থানার মুইধাড়ার বাসিন্দা সৈয়দ নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত। দুবছর আগে বেঙ্গালুরুর এক বেসরকারি হাসপাতালে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে ইতিমধ্যেই ৭ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন তিনি। কেমো থেরাপির জন্য এখনও প্রয়োজন ১.৪০ লক্ষ টাকা। তবে অর্থের অভাবে আটকে রয়েছে চিকিৎসা। এহেন পরিস্থিতিতে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী রিলিফ ফাণ্ডে আবেদনের জন্য বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সৌমিত্র খাঁর কাছে যান নজরুল। তবে তিনি না থাকায় তাঁর পিএকে সবটা জানান। পিএ বিষয়টি নিয়ে ফোনে কথা বলেন সৌমিত্রর সঙ্গে। নজরুলের অভিযোগ, সাংসদের পিএ তাঁকে জানান, এই সার্টিফিকেট তাঁকে দেওয়া হবে না। কারণ, তিনি তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন তাই সাংসদ স্পষ্টভাবে সার্টিফিকেট দিতে নিষেধ করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ কীর্তি আজাদের সঙ্গে দেখা করেন নজরুল ইসলাম। কীর্তি তাঁর কাছে জানতে চান তাঁর এলাকার সাংসদ কে? রোগী এর পর সৌমিত্র অফিসে যাওয়া ও বিতাড়িত হওয়ার কথা জানান কীর্তিকে। তাঁর কাছ থেকে সব শোনার পর সঙ্গে সঙ্গে সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করে দেন কীর্তি।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সাংসদ কীর্তি আজাদ বলেন, “আমি ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচির জন্য কলকাতা যাচ্ছিলাম। রাস্তায় এই খবর পেয়ে বর্ধমানের পার্টি অফিসে যাই এবং ওই ব্যক্তিকে শংসাপত্র দিই।” পাশাপাশি সৌমিত্রকে আক্রমণ শানিয়ে বলে, “ভোটের পর এখন তিনি সবার সাংসদ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে ভোট দিয়েছে, কে তাকে ভোট দেয়নি সেই হিসেব করে তিনি প্রধানমন্ত্রী রিলিফ ফাণ্ডের সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। এটা কোনওভাবেই কাম্য নয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.