রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: হঠাৎ দেখলে বোঝাই যাবে না এই দেওয়াল লিখন ভোটের জন্য হয়নি। এর আবেদন অন্যত্র৷ বরং বিস্ময় জাগতে পারে, ইনি আবার কোন প্রার্থী, যিনি স্বয়ং দেবী দুর্গার নামে ধুনুচি চিহ্নে ভোট চাইছেন! কোন দলই বা এটা, যাঁরা প্রার্থীর হয়ে এভাবে প্রচার করছেন? ভোট শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পর আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার মুক্তিপাড়ায় এই দেওয়াল লিখন দেখে অনেকেই থমকে দাঁড়াচ্ছেন৷ বুঝতে চাইছেন, ব্যাপারটা ঠিক কী৷
আসলে এই দেওয়াল লিখন কোনও ভোটপ্রচারের জন্য নয়। বরং ভোটের হাওয়াকে কাজে লাগিয়ে দুর্গাপুজোর ঢাকে কাঠি ফেলার প্রয়াসমাত্র। ভোটের বাজারে সকলের নজর কাড়তে তাই সেইরকম আদলে দেওয়াল লিখে পুজোর প্রচার শুরু করে দিল আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা শহরের মুক্তিপাড়া ইউনিট। উত্তরবঙ্গের নামী এই দুর্গাপুজো কমিটি প্রতি বছর তাদের পুজোয় কিছু না কিছু চমক দেন। এবারও চমকের ঝুলিতে রয়েছে অনেক কিছুই৷ তারই একটা নিদর্শন দেখা গেল দেওয়াল লিখনে৷
পয়লা বৈশাখে এই ক্লাবের খুঁটি পুজা হয়ে গেছে। আর তারপর থেকেই আসন্ন শারদীয় উৎসবে ‘মা দুগ্গা’কে ‘ধুনুচি’ চিহ্নে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়ে দেওয়াল লিখন শুরু করেছেন মুক্তিপাড়া ইউনিটের সদস্যরা। কিন্তু এভাবে কেন? প্রশ্নের উত্তরে ক্লাবের সম্পাদক সনাতন রায় বলেন, ‘সবটা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। তবে এইটুকু বলতে পারি, প্রচারে চমক আনতে এবার এই দেওয়াল লিখনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চারিদিকে ভোটের হাওয়া। সেই হাওয়াকে কাজে লাগানো হচ্ছে মাত্র। এ তো শুধু ট্রেলার। ফিল্ম আভি বাকি হ্যায়।’ জানা গেছে, ফালাকাটার মুক্তিপাড়া ইউনিটের পুজো এবার ৬১ বছরে পা দেবে৷ পুজোর বাজেট ১৫ লক্ষ টাকারও বেশি। তৈরি হবে বিশেষ থিম৷
সপ্তাহ খানেক কয়েক আগে উত্তর কলকাতার টালা পার্কে এমনই এক দেওয়াল লিখন নজর কেড়েছিল শহরবাসীর৷ সেখানে লেখা ছিল, ‘টালা পার্ক প্রত্যয় মনোনীত প্রার্থী সুশান্ত পালকে ত্রিনয়নী চিহ্নে বোতাম টিপে বিপুল ভোটে জয়ী করুন৷’ এটি দেখেও প্রথমে চমকে গিয়েছিলেন অনেকে৷ তারপর জানা গিয়েছিল আসল রহস্য৷ প্রার্থী সুশান্ত পাল জানিয়েছিলেন, ভোটপর্ব মিটতে মিটতে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু করার পালা৷ তাই গণতন্ত্রের উৎসবের সঙ্গে বাঙালির সেরা উৎসবের মেলবন্ধন করার চেষ্টা হয়েছে আর কি৷ এবার শহরের গণ্ডি ছাড়িয়ে সেই একই ছবি ধরা পড়ল জেলাতেও৷ বোঝা গেল, বাংলা জুড়ে যতটা নির্বাচনী হাওয়া, ঠিক ততটাই উৎসবের আবহও৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.