দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: নিজের বাড়ির দোতলায় উঠতে পারতেন না। ছেলে-বউমা তালা দিয়ে রাখত। এমনই অভিযোগে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কোন্নগরের প্রতাপ মুখোপাধ্যায় ও অঞ্জনা মুখোপাধ্যায়। বিচার চেয়েছিলেন বৃদ্ধ দম্পতি। তা পেলেন। হাই কোর্টের নির্দেশে ছেলে-বউমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে বৃদ্ধ দম্পতিকে তাঁদের অধিকার ফিরিয়ে দিল পুলিশ।
সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে কোন্নগর বাটার মোড় এলাকায়। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রতাপবাবু ও তাঁর স্ত্রী অঞ্জনাদেবী, ছেলে সুশান্ত ও তার স্ত্রী একই বাড়িতে থাকতেন। সুশান্তর একটি পাঁচ বছরের মেয়েও আছে। ছেলে-বউমা দোতলার ঘরে থাকতেন। বৃদ্ধ দম্পতি থাকতেন একতলায়। প্রতাপবাবুর অভিযোগ, নিজের উপার্জনের অর্থে তৈরি বাড়ি। অথচ তাঁর দোতলায় যাওয়ার অধিকার ছিল না। দোতলায় যাওয়ার সিঁড়ির গেটে তালা লাগিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর ছেলে-বউমা। ছাদেও যেতে দেওয়া হতো না।
ছেলে-বউমা তাঁদের খাবার পর্যন্ত দিতেন না বলে অভিযোগ করেন প্রতাপবাবুর। বউমার বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ জানিয়েছেন অঞ্জনাদেবীও। বৃদ্ধ দম্পতির দাবি, অত্যাচারের মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। এর আগে পুলিশ বেশ কয়েকবার এসে দোতলার তালা খুলে দেওয়ার কথা বললেও ছেলে-বউমা তা করেননি।
বাবা-মায়ের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুশান্ত মুখোপাধ্যায়। পেশায় টোটোচালক তিনি। তাঁর পালটা অভিযোগ, বিয়ের দু-তিন বছরের মাথায় স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে বলেছিলেন বাবা-মা। তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের উপর মানসিক অত্যাচার চালাতে থাকেন প্রতাপবাবু ও তাঁর স্ত্রী। সুশান্তবাবুর স্ত্রী পম্পার অভিযোগ, গত আট বছর ধরে তিনি ও তাঁর মেয়ে অত্যাচারিত হচ্ছেন। ছ’বছর আগে বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছিল। অন্যায়ভাবে তাঁদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলেই দাবি পম্পাদেবীর। স্বামী টোটো চালিয়ে সামান্য রোজগার করেন। এমন পরিস্থিতিতে ছোট্ট সন্তানকে নিয়ে তাঁরা কোথায় যাবেন? এই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.