সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কবে কার্যকর হবে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন? রাজ্যের মতুয়া সম্প্রদায়ের বহু মানুষ বহুদিন এই প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় ছিলেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার ঠাকুরনগরের জনসভা থেকে সেই প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুধু জবাব দিলেন না, একেবারে সদর্পে ঘোষণা করে দিলেন, দেশজুড়ে টিকাকরণ প্রক্রিয়া মিটলে এবং করোনা থেকে মুক্তি পেলেই দেশজুড়ে ‘বিতর্কিত’ ওই আইনটি কার্যকর করবে কেন্দ্র।
বাংলার নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু সিএএ। বাংলার প্রায় ৩০ টি আসনে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর মতুয়া ভোট। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েই মতুয়াদের সমর্থন পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু গত ১৩ মাসে এই আইন কার্যকর না হওয়ায় মতুয়াদের মধ্যেও চাপা অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছিল। যা আঁচ করতে পেরেই বৃহস্পতিবার ঠাকুরনগর থেকে এই আইন কার্যকর করার সম্ভাব্য দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিলেন শাহ। সেই সঙ্গে, আইন কার্যকরে এত দেরি হওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
ঠাকুরনগরের সভায় অমিত শাহ (Amit Shah) বলেন, “বিভাজনের সময় কংগ্রেস নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যে সব হিন্দু শরণার্থী আসবেন, তাঁদের আমরা ভারতের নাগরিকত্ব দেব, সম্মান দেব। কিন্তু ৭০ বছরে সেই প্রতিশ্রুতি পুরণ করেনি। ২০১৮ সালে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, মোদি সরকার ক্ষমতায় এলেই CAA চালু করব। ২০২০ সালেই আমরা সেই প্রতিশ্রুতি পালন করেছি। নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করেছি। কিন্তু এরপর করোনা এসে গেল। আইন চালু করতে দেরি হয়ে গেল। মমতা দিদি প্রচার করা শুরু করলেন, এঁরা নাগরিকত্ব দেবে না। এমনিই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আর করতে চাইলেও আমি করতে দেব না। কিন্তু মমতা দিদি এটা বিজেপির (BJP) সরকার। যা বলে সেটা করে দেখায়। আমি আজ এই সভা থেকে ঘোষণা করে দিচ্ছি, যখনই করোনার টিকাকরণ শেষ হবে। যখনই আমরা করোনা থেকে মুক্তি পাব, তখনই আপনাদের নাগরিকত্ব দেওয়া শুরু হবে।”
শাহ অভিযোগ করেন রাজ্যের সংখ্যালঘুদের CAA নিয়ে বিভ্রান্ত করছে বিরোধীরা। তাঁর কথায়, “এটা বিজেপির সরকার। অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকতে দেবে না। আর শরণার্থীদের আলিঙ্গন করে নেবে। কংগ্রেস, বাম, তৃণমূল সংখ্যালঘুদের বিভ্রান্ত করছে। আমি সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করছি, CAA তে একজন মুসলিমেরও নাগরিকত্ব যাবে না। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে কারও নাগরিকত্ব যাওয়ার কথা কোথাও লেখা নেই। আমি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আপনাদের পবিত্র মনে কথা দিচ্ছি।”
শুধু CAA নয়, এদিন মতুয়া সমাজের জন্য একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি ঘোষণা করেছেন, “বিজেপি ক্ষমতায় এলে আমরা ‘মুখ্যমন্ত্রী শরণার্থী সমাজ’ তৈরি করব। মতুয়াদের দলপতিদের পেনশনের ব্যবস্থা করা হবে। গুরুচাঁদ-হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরের পরিকাঠামোর উন্নতি করা হবে। ঠাকুরনগর রেল স্টেশনের নাম আমরা শ্রীধাম ঠাকুরনগর রেল স্টেশন রাখতে চাই। কিন্তু মমতার সরকার সেই প্রস্তাবে সায় দেয়নি। বাংলায় বিজেপি সরকার এলে এক সপ্তাহের মধ্যে ঠাকুরনগর রেল স্টেশনের নাম বদলে দেওয়ার প্রস্তাব পাঠানো হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.