জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: CAA লাগুর ডেডলাইন বেঁধে দিয়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে চর্চাও কম হয়নি। তবে আলোচনাই সার। কারণ, ডেডলাইন ঘোষণার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই ডিগবাজি বিজেপি সাংসদের। এক সপ্তাহের মধ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ চালুর আশ্বাসকে ‘স্লিপ অফ টাং’ বলেই দাবি করলেন তিনি। শান্তনুকে পালটা কটাক্ষ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের।
গত ২৮ জানুয়ারি, রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির নিশ্চিন্তপুরে সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে শান্তনু বলেন, ‘‘যাঁরা ১৯৭১ সালের পরে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দরকার। কারণ, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে হবে। বিজেপি সরকার সিএএ চালু করলে আর কোনও সরকারের ক্ষমতা নেই, আমাদের যখন খুশি ঘাড়ধাক্কা দিয়ে দেশ থেকে বার করে দেয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ চালু করবে।’’ শনিবার নিজেই নিজের অবস্থান থেকে ডিগবাজি খেলেন শান্তনু। তাঁর দাবি, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে রুল ফ্রেম (নীতি প্রণয়ন) সম্পন্ন হবে বলতে গিয়ে মুখ ফসকে গিয়েছিল। কিন্তু সিএএ কিছুদিনের মধ্যে লাগু হবে এটা ১০০% গ্যারান্টি।’’ পালটা জবাব দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ওটা স্লিপ অফ টাং নয়। মিথ্যা বলতে বলতে এভাবে একদিন জিভটাই খসে পড়বে।’’
উল্লেখ্য, দিল্লিতে দ্বিতীয় মোদী সরকার গঠনের পরই ২০১৯ সালে এই নাগরকিত্ব সংশোধনী আইন পাশ করানো হয়েছিল। কিন্তু মাঝে বেশ কয়েকটি বছর কেটে গেলেও, সেই আইন এখনও কার্যকর হয়নি। কেন আইন এখনও কার্যকর হচ্ছে না তা নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা যেমন হয়েছে, তেমনই আমজনতার মধ্যেও কৌতূহল তৈরি হয়েছে বিস্তর। তবে প্রথম থেকে সিএএ বিরোধিতায় সরব তৃণমূল। শান্তনু ডেডলাইন দেওয়ার পরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিজেপি সাংসদের মন্তব্যের পরই সুর চড়িয়েছিলেন মমতা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এখন ক্যা-ক্যা করে চিৎকার করছে। এটা ফ্যা-ফ্যা ভোটের রাজনীতি করার জন্য। আপনারা সবাই নাগরিক। আপনাদের সবাইকে নাগরিক হিসাবে আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি। সমস্ত উদ্বাস্তু কলোনিকে স্থায়ী ঠিকানা দিয়ে দিয়েছি। তারা সবাই রেশন পায়, স্কুলে যায়, স্কলারশিপ পায়, কিসান বন্ধু পায়, শিক্ষাশ্রী পায়, ঐক্যশ্রী পায়, লক্ষ্ণীর ভাণ্ডার পায়। সে নাগরিক না হলে থোড়াই এ সব পেত। নাগরিক না হলে তারা ভোট দিতে পারত?’’ রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করেছিলেন, অন্যান্যবারের মতো শান্তনু এবারও সারবত্তাহীন দাবি করেছেন। শান্তনুর ডিগবাজি যেন রাজনৈতিক মহলের দাবিতেই সিলমোহর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.