শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে গৃহকর্তাকে মারধর করে দুঃসাহসিক ডাকাতি৷ নগদ টাকা ও সোনার গয়না লুট করেছে দুষ্কৃতীরা৷ লুটপাটের পর শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালাতে চালাতেই এলাকা ছাড়ে ডাকাত। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার পানিছোঁড়া গ্রামে৷ নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তদন্তে পুলিশ।
চন্দ্রকোনার পানিছোঁড়ার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা রাজীব রায়৷ পেশায় তিনি সার ব্যবসায়ী৷ স্ত্রী, ছেলে এবং ভাইপোকে নিয়েই থাকেন। রাজীব রায় জানিয়েছেন, শনিবার রাত ন’টা নাগাদ ছেলে বাড়ি ফেরার পর সদর দরজা খোলাই ছিল। কিছুক্ষণ পরই হুড়মুড়িয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়ে পাঁচজন দুষ্কৃতী।কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই ব্যবসায়ীর ছেলে ঋষিকে তারা বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। আক্রান্ত ব্যবসায়ীর দাবি, ছেলেকে বাঁচাতে গেলে, তাঁকেও ধরে ফেলে দুষ্কৃতীরা। মারধরের পর একটি গামছা দিয়ে মুখ-হাত বেঁধে পাশের ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। দুষ্কৃতীদের এর পরের টার্গেট ছিলেন ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী লক্ষ্মীপ্রিয়া৷ তাঁকেও মারধর করা হয়৷ এরপরই শুরু হয় লুটপাট। নগদ ১৬ হাজার টাকা, ১ ভরি সোনার হার এবং এক জোড়া কানের দুল লুট করেছে দুষ্কৃতীরা৷ ঘটনার সময়ে বাড়ির দোতলার ঘরে ছিলেন ব্যবসায়ী রাজীব রায়ের ভাইপো৷ বাড়িতে ডাকাত পড়েছে বুঝতে পেরে নিজের লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক নিয়ে নিচে নেমে আসেন তিনি৷ এক রাউন্ড গুলিও চালান৷ গুলির শব্দ পান ব্যবসায়ীর পাড়া-প্রতিবেশীরা৷ তড়িঘড়ি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন তাঁরাও৷ পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে শেষপর্যন্ত গুলি চালাতে চালাতে এলাকা থেকে চম্পট দেয় ডাকাতরা।
খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান ঘাটালের এসডিপিও কল্যাণ সরকার, ওসি প্রশান্ত পাঠক। রাজীব রায় ও তাঁর পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা৷পুলিশকে ওই ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের মধ্যে দু’জনের মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা ছিল। তারা বাংলায় কথা বলছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত কয়েকদিন এলাকায় বেড়েছে অসামাজিক কার্যকলাপ৷ চন্দ্রকোনায় একের পর এক চুরি-ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ তাঁদের৷ যদিও পুলিশের দাবি, এই ঘটনাগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ খুব শীঘ্রই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে৷
ছবি: সুকান্ত চক্রবর্তী
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.