ধীমান রায়, কাটোয়া: চুড়িদার, স্কার্ফ-সহ রেডিমেড পোশাকের ব্যবসা। বিভিন্ন রাজ্য-সহ ভিনদেশেও রপ্তানি হত সেসব। কিন্তু লকডাউনে পোশাক উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এই সময়ে করোনা যুদ্ধের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হাতিয়ার PPE কিট তৈরি করতে শুরু করেছে কাটোয়ার একটি পোশাক প্রস্তুতকারক সংস্থা। আর এই সংস্থার দৌলতে কাটোয়া শহরের প্রচুর দরজি ফের কাজ পেয়েছেন। একদিকে যেমন PPE কিট বানিয়ে করোনা মোকাবিলায় সুবিধা হচ্ছে, তেমনই কাজ পেয়ে আর্থিক চিন্তার ভার লাঘব হয়েছে পোশাক প্রস্তুতকারকদের।
কাটোয়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় দীপা আগরওয়ালের পোশাক তৈরির কারখানা। কলকাতার ২০ জন এবং স্থানীয় এলাকার প্রায় ৪০ জন স্থায়ী কর্মী রয়েছেন। যাঁরা সারা বছর কাজ করেন। এখানে মূলত খাদি ও হ্যান্ডলুমের চুড়িদার, স্কার্ফ তৈরি হয়। যার বেশিরভাগই ভিনরাজ্যে ও বিদেশে যায়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরু এবং লকডাউনের পর থেকেই দীপাদেবীদের কারখানায় পোশাক তৈরির কাজ একপ্রকার বন্ধ রাখা হয়। শুধুমাত্র বরাত নেওয়া কাজ সম্পূর্ণ করা হয়। তারপরেই তন্তজর মাধ্যমে ওই সংস্থাকে পিপিই কিট তৈরির বরাত দেওয়া হয়। প্রায় একমাস ধরে শুধু পিপিই কিট এখন তৈরি হচ্ছে। আর এই কাজের জন্য কাটোয়া শহরের ৮০ – ৮২ জন টেলারিং ব্যবসায়ীদের কাজে নিয়েছেন দীপাদেবী।
কাটোয়ার এই পোশাক প্রস্তুতকারক সংস্থার স্থায়ী কর্মীরা PPE কিট তৈরির কাজ পেয়ে একনাগাড়ে তা করে যাচ্ছেন। সংস্থার প্রধান দীপা আগরওয়াল বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারের সংস্থা তন্তুজ থেকে PPE কিট তৈরির বরাত পেয়েছি। রোজ প্রায় ২০০০ কিট তৈরি হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৫০ হাজার কিট তন্তুজকে সরবরাহ করা হয়েছে। এখনও পুরোদমে কাজ চলছে।” দীপাদেবী জানিয়েছেন, লকডাউনের পর থেকেই তাদের পোশাক উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। বদলে তৈরি হচ্ছে করোনা যুদ্ধের এই হাতিয়ার। কাটোয়া শহরের টেলারিংয়ের ব্যবসায়ী সুকুমার দত্ত, জয় ভৌমিকরা বলছেন, “লকডাউনের কারনে আমাদের ব্যবসা বন্ধ ছিল। এই অবস্থায় PPE কিট তৈরি করার কাজ পেয়েছি। তাতে আমাদের রোজগার হচ্ছে। সংসার চালাতে সমস্যা হয়নি।”
ছবি: জয়ন্ত দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.