জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: নৃশংস হত্যাকাণ্ড উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায়। রাতের অন্ধকারে বাড়ির সামনেই গলার নলি কেটে, এলোপাথাড়ি কুপিয়ে এক ব্যক্তিকে খুনের ঘটনায় ছড়িয়ে পড়ল তীব্র চাঞ্চল্য। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি ব্যবসায়ী। এর আগে গরু ও মাদক পাচারের মতো বেআইনি কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। ফলে তাঁকে হত্যার ঘটনা একাধিক জল্পনা উসকে দিল। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় গাইঘাটা (Gaighata) থানার পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটা থানার ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের কাহনকিয়া এলাকায়। মৃতের নাম বিধান সরকার। মাহিশাকাঠি বাজারে তাঁর একটি মাছের খাবার ও একটি ফার্নিচারের দোকান রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে দোকান বন্ধ করে বিধানবাবু মোটর সাইকেলে করে বাড়িতে ফিরেছিলেন। সেসময় বাড়ির সামনেই হামলা হয়। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বিধানবাবু ফেরার পর মোটর বাইক বাড়ির সামনে গ্যারেজে রাখেন। সেই শব্দও পান সকলে। কিন্তু তারপর বেশ খানিকটা সময় কেটে গেলেও তিনি ঘরে না আসায় তাঁকে খুঁজতে বেরন ছেলেরা। দেখা যায়, তারা দেখেন বাড়ির সামনের রাস্তার উপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বছর তেষট্টির বিধান সরকার। গলায় আঘাতের চিহ্ন, মুখে মাফলার জড়ানো রয়েছে। তিনি যে খুন হয়েছেন, তা বুঝতে আর বাকি নেই কারও।
সঙ্গে সঙ্গে খবর পাঠানো হয় পুলিশে। গাইঘাটা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে প্রথমে চাঁদপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর মাথায়, গলায় ও পায়ে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ সূ্ত্রে খবর, অতীতে গরু পাচার, মাদক পাচার-সহ একাধিক বেআইনি কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিল বিধান। কয়েক বছর আগে মাদক পাচারের অভিযোগে তাঁকে গাইঘাটা থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। এই মুহূর্তে রাজ্যে কয়লা ও গরু পাচারের কিনারা করতে অতি সক্রিয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ফলে এই মুহূর্তে বিধান সরকারের মৃত্যুর ঘটনা বেশ গুরুত্ব সহকারেই দেখা হচ্ছে। সম্প্রতি তিনি সমাজসেবায় মন দিয়েছিলেন। এলাকার গরিব মানুষদের আর্থিকভাবে সাহায্য করতেন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, পুরনো শত্রুতার জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে। একজনকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে৷
এদিকে, রাতে বিধান সরকারের মৃত্যুর পর শুক্রবার সকালে তাঁর শ্যালিকা তনু বিশ্বাসের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই দুই মৃত্যুর ঘটনার কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখঠে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.