ছবি: প্রতীকী
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে ঝাঁ-চকচকে শপিংমলে রবিবার দুপুরে চুল কাটাতে এসেছিলেন৷ তারপর আর বাড়ি ফেরেননি বেসরকারি অ্যালয় কারখানার জেনারেল ম্যানেজার (GM)। সন্ধেবেলা ওই ব্যক্তির ফোন থেকেই কেউ ফোন করে স্ত্রীকে জানায়, অপহরণ করা হয়েছে রাজেশ জৈন নামে কারখানার আধিকারিককে৷ এ নিয়ে দানা বেঁধেছে রহস্য।
দুর্গাপুরের অভিজাত এলাকার বহুতলে সপরিবারে থাকেন রাজেশ জৈন। তিনি বাঁকুড়ার একটি লৌহ আকরিক কারখানার জেনারেল ম্যানেজার। রবিবার দুপুর প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ ওই বহুতল আবাসন থেকে চুল কাটানোর জন্য সিটি সেন্টারের উদ্দেশে রওনা হন। আড়াইটে নাগাদ সিটি সেন্টারের জংশন মলের পার্লারে ঢোকেন। দীর্ঘক্ষণ বাড়ি না ফেরায় তাঁর স্ত্রী বিকালে তাঁকে ফোন করেন৷ কিন্তু তিনি ফোন না ধরায় সংশয় বাড়তে থাকে। পরিবার সূত্রে খবর, সন্ধে ৬টা নাগাদ রাজেশ জৈনের ফোন থেকেই তাঁর স্ত্রীর মোবাইলে ফোন আসে।
ফোনে স্ত্রীকে জানানো হয়, তাঁর স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। রাজেশবাবুর স্ত্রী ও আত্মীয়রা পুলিশকে বিষয়টি জানান। দুর্গাপুর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে জংশন মলের CCTV ফুটেজ খতিয়ে দেখে৷ রাজেশ জৈনের মলে যাওয়ার ছবি ধরা পড়ে তাতে। সেখান থেকেই তাঁকে অপহরণ করে হয় বলে অভিযোগ। স্ত্রীর কাছে যে ফোন আসে তাতে কি মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে? জানা গেছে, ফোনের ওপার থেকে বাংলায় কথা বলার কারণে রাজেশবাবুর হিন্দিভাষী স্ত্রী স্পষ্টভাবে অনেক কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি। তবে স্বামীর অপহরণের বিষয়টি নিয়ে তিনি নিশ্চিত।
সত্যিই কি এটা অপহরণের ঘটনা? নাকি ব্যবসায়িক সংঘাতে নিজেই উধাও হয়েছেন জেনারেল ম্যানেজার? তদন্তে নেমে দুর্গাপুর থানার পুলিশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে। ভরদুপুরে অপহরণ হলে শপিং মলের সামনে কারও চোখে এই ঘটনা ধরা পড়ত। তাঁরা তো বিষয়টি অন্যদের নজরে আনতে পারতেন। কিন্তু তা হল না কেন? সন্ধেবেলা স্ত্রীর কাছে ফোন আসা পর্যন্ত অপহরণের কথা জানা গেল না কেন?
কয়েকবছর আগে দুর্গাপুর ও আসানসোলের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি অপহরণ হন। সেসময় এই অপরাধের নেপথ্যে বিহার ও ঝাড়খণ্ডের যোগ পেয়েছিল পুলিশ। মুক্তিপণের বিনিময়ে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের উদ্ধার করা হয়। তবে এবার ফোন এসেছে কোনও বাংলা ভাষীর তরফে। আর তাই ধন্দে পুলিশ। রাজেশ জৈনের তাঁর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিটি সেন্টার এলাকার সমস্ত CCTV ফুটেজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.