সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ফের দুর্গাপুরে ব্যবসায়ীকে অপহরণ। ভর সন্ধেবেলায় বাড়ির কাছ থেকে দুষ্কৃতীরা তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। পরিবারের লোকেদের দাবি, দিন দুয়েক আগে্ দু’জন অচেনা যুবক ওই ব্যবসায়ীর খোঁজে বাড়িতে এসেছিল। এদিকে ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী আবার জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে ধানবাদ থেকে ফোনে স্বামী জানিয়েছেন, তিনি ভাল আছেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এক বন্ধুকে ৫ লক্ষ টাকা ধার দিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী। যিনি টাকা ধার নিয়েছিলেন, তাঁর বাড়ি দুর্গাপুরেরই সেপকো টাউনশিপে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শিল্পশহরে।
অপহৃত ব্যবসায়ীর নাম লাল্টু রাজবংশী। বাড়ি, দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের নার্গাজুন রোডে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা ছিল লাল্টুর। স্টিল টাউনশিপে আবাসন কেনাবেচা-সহ বেশ কয়েকটি বেআইনি ব্যবসাতেও তাঁর অংশীদারি ছিল বলে অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ নার্গাজুন রোডে একটি ওষুধের দোকানের সামনে লাল্টুকে অপহরণ করে একদল দুষ্কৃতী। একটি গাড়িতে করে ওই ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে চলে যায় তারা। অপহরণকারীদের বাধা দেওয়ারও চেষ্টা করেছিলেন ওই ওষুধের দোকানের মালিক আশিস বাগদি। তিনিই লাল্টু রাজবংশীর বাড়িতে খবর দেন। ঘটনাটি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে দুর্গাপুর শহরে।
কিন্তু ভর সন্ধেবেলা কারা অপহরণ করল লাল্টু রাজবংশীকে? পরিবারের লোকেদের বক্তব্য, রবিরার লাল্টুর খোঁজ করতে বাড়িতে আসে দু’জন অচেনা যুবক। তখন অবশ্য তিনি বাড়িতে ছিলেন না। ওই ব্যবসায়ীকে না পেয়ে ফিরে যায় ওই দু’জন যুবক। লাল্টু রাজবংশীর বাড়ির লোকের দাবি, ওই দু’জনের মধ্যে একজনের মুখে লাল গামছা বাঁধা ছিল। এবং তারা বীরভূমের ইলামবাজার থেকে এসেছিল। লাল্টু যেখান থেকে অপহরণ করা হয়েছে, সেখানেও একটি লাল গামছা পাওয়া গিয়েছে। অপহরণস্থল থেকে ওই ব্যবসায়ীর স্কুটিটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে লাল্টুর একটি ফোনও। ফোনের কললিস্ট খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, দুটি ফোন ব্যবহার করতেন লাল্টু। বাড়ি থেকে একটি ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। আর অপহরণের সময়ে আর একটি ফোন লাল্টুর কাছেই ছিল। ঘটনার আধঘণ্টা পর্যন্ত সেই ফোনটি চালু ছিল। টাওয়ার লোকেশন আসানসোল। ২০১৩ সালে দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপ থেকে অরূপ সাহা নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করা হয়েছিল। এখনও তাঁর খোঁজ মেলেনি। আদালতের নির্দেশের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই।
ছবি: উদয়ন গুহরায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.