ধীমান রায়: আপনি কিন্তু নজরবন্দি! ভিড়ের মধ্যে মিশে বহু ‘সোর্স’ লক্ষ্য রাখছেন আপনার বাড়ির উপর। কোথায় যাচ্ছেন, কখন যাচ্ছেন, কখন ফিরছেন, সব হিসেব থাকছে ‘ওদের’ কাছে। মনের আনন্দে ঘুরতে গেলেন, ভাবলেন মাথাটা হালকা করে আসবেন, বাড়ি ফিরে দেখতেই পারেন আপনার বাড়ির লকার-আলমারি সবই ফাঁকা। কাটোয়া শহরের একের পর এক ফাঁকা বাড়িতে চুরির রহস্যের কিনারা করতে ঘুম ছুটেছে পুলিশের। আতঙ্কিত শহরবাসীও। তস্কর বাহিনীর দৌরাত্ম্যে বাড়ি ফাঁকা রেখে কোথাও যেতে ভয় পাচ্ছেন গৃহস্থরা। শুধু রাতের বেলাতেই নয়, দিন-দুপুরেও ফাঁকা বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সম্প্রতি দু-তিন মাসের মধ্যে কাটোয়া শহরে বেশ কয়েকটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে বাড়িতে লোকজন না থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে চোরেরা তালা ভেঙে চুরি করে পালিয়েছে বাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র।
গত অক্টোবর মাসে কাটোয়ার ডাকবাংলো রোডে একটি ব্যাংকের শাখায় দুঃসাহসিক চুরি হয়। দুষ্কৃতীরা ব্যাংকের লোন সেকশন থেকে কয়েকটি কম্পিউটার, নগদ কিছু টাকা সঙ্গে আরও কিছু জিনিস চুরি করে। ওই মাসেই কাটোয়া শহরে দু’টি পাশাপাশি সোনা-রুপোর দোকানে তালা ভেঙে দুঃসাহসিক চুরির হয়। জানুয়ারি মাসের প্রথমদিকে মাত্র দেড়-দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কাটোয়া শহরে পাঁচটি বাড়িতে চুরি হয়। সেসময় ওই বাড়িতে কেউ ছিলেন না। পরিবারের সদস্যরা কেউ আত্মীয়বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন। কেউ কোথাও দুরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। তারা বাড়ি ফিরে আসার পর চুরির ঘটনা জানতে পারেন। কাটোয়ার একটি মেসবাড়িতেও দু’টি ঘরের তালা ভেঙে ল্যাপটপ, মোবাইল-সহ টাকা পয়সা চুরি গিয়েছিল।
সম্প্রতি কাটোয়া থানার পুলিশ চুরির ঘটনায় মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে কিছু চুরি যাওয়া সামগ্রী পুলিশ উদ্ধার করে। ধৃত ব্যক্তিকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে চোরেদের চক্রটি প্রথমে তাঁদের সোর্সদের কাজে লাগিয়ে এলাকার ওপর নজর রাখে। বিশেষ করে নাবালক ও মহিলাদের সোর্স হিসাবে কাজে লাগায় তারা। সোর্সরাই পাড়ায়-পাড়ায় ঘুরে-ঘুরে খবর দেয় কোন বাড়িতে লোকজন নেই। তারপর সেই বাড়িতে গিয়ে হানা দেয় চোরেরা। কাজ হাসিল হয়ে গেলে সোর্সদের বকশিস দেয় দুষ্কৃতীরা। এভাবে সোর্সদের কাজে লাগিয়ে চুরির ঘটনা বেশি করে ভাবাচ্ছে পুলিশ আধিকারিকদেরও। কাটোয়া শহরের বুকেই বাড়ি, দোকান মিলে গত দু-তিন মাসে বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। তাতে মাত্র কয়েকজনকেই গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পুলিশ। কিন্তু এখনও উদ্ধার হয়নি চুরি যাওয়া সামগ্রীর সিংহভাগই।
[সামান্য বিবাদের জের, বন্ধুর হাতে গুলিবিদ্ধ ব্যবসায়ী]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.