Advertisement
Advertisement

Breaking News

গাছের রসেই নিকেশ মশা, যুগান্তকারী আবিষ্কার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের

নতুন এই প্রযুক্তি ইকো-ফ্রেন্ডলিও বটে।

Burdwan University researcher found new way to eliminate mosquitoes
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:August 22, 2018 9:31 am
  • Updated:August 22, 2018 4:34 pm  

সৌরভ মাজী, বর্ধমানঃ মশা মারতে কামান দাগা অনেক হয়েছে। এবার ডেঙ্গু-সহ মশাবাহিত বিভিন্ন রোগের মোকাবিলায় এসে গিয়েছে অত্যাধুনিক পদ্ধতি। মশককূলের বিনাশ করবে ‘গ্রিন সিন্থেসাইজড ন্যানো পার্টিকল’।বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মশা গবেষণাগারের এই আবিষ্কার এখন পেটেন্ট পাওয়ার প্রতীক্ষায়। পেটেন্ট মিললেই বাণিজ্যিকভাবে বাজারে চলে আসবে অত্যাধুনিক এই আবিষ্কার। ডেঙ্গু-সহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ মোকাবিলায় এই প্রযুক্তি যুগান্তকারী হয়ে থাকবে বলেই আসা করছেন গবেষকরা।

[বাংলাতেও ‘মোমো’ চ্যালেঞ্জের থাবা, মারণখেলার খপ্পরে জলপাইগুড়ির ছাত্রী]

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক তথা বিজ্ঞানী গৌতম চন্দ্রর তত্ত্বাবধানে গবেষক অনুপম ঘোষ ও অঞ্জলি রাওয়ানি এই আবিষ্কার করেছেন। অনুপমবাবু বর্তমানে বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের ও অঞ্জলিদেবী গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। গৌতমবাবু দীর্ঘদিন ধরেই মশা নিয়ে গবেষণা করছেন। ডেঙ্গু-সহ মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে তিনি নিত্যনতুন আবিষ্কার ও পদ্ধতি অবলম্বন করে সফলতা এনে দিয়েছেন। মশা নিধনে ২০১৩ সাল থেকে ন্যানো পার্টিকল নিয়ে গবেষণা করছেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত এসেছে সাফল্য।

Advertisement

মঙ্গলবার গৌতমবাবু জানান, গাছের রসের সঙ্গে সিলভার (রুপো) ও কপার (তামা)-র যৌগ মিশিয়ে এই ন্যানো পার্টিকল তৈরি করা হয়েছে। মূলত ট্রায়াল অ্যান্ড এরর পদ্ধতিতে বিভিন্ন গাছের রস ব্যবহার করেন তাঁরা। তার পর তা মশার লার্ভার উপর ট্রিট করেন। প্রথম পর্যায়ে সোলানাম নাইগ্রাম প্রজাতির গাছের রস ব্যবহার করেন এই পার্টিকল তৈরিতে। তার পর পুত্রনজীবা ও মেহগিনি গাছের রসে দিয়েও ন্যানো পার্টিকল তৈরি করেন। তাতেও মশার লার্ভা বিনষ্ট করার ক্ষেত্রে সাফল্য পান তাঁরা। সেই সব গবেষণালব্ধ আবিষ্কার বিভিন্ন বিজ্ঞান সংক্রান্ত পত্রিকায় প্রকাশিতও হয়েছে। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি আরও ভাল কিছু করার তাগিদে নিরন্তন প্রচেষ্টা চালিয়েছেন এই বিজ্ঞানীরা।

[মদ ছুঁলেই চরম শাস্তি, নেশামুক্তি অভিযানের আইকন বীরভূমের ‘মদের গ্রাম’]

বছর তিনেক আগে একটি বিশেষ প্রজাতির গাছের সঙ্গে সিলভার ও কপারের যৌগ দিয়ে ট্রিট করে তৈরি করেন গ্রিন সিন্থেসাইজড ন্যানো পার্টিকল। এই পার্টিকলগুলি মূলত গোলাকার ও ছয়কোণা হয়ে থাকে। পার্টিকল কার্যকরী কিনা তা নিশ্চিত হতে ট্রান্সমিশন ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ-সহ পদার্থবিদ্যার বিভিন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালাতে হয়েছে তাঁদের। তারপর এর পেটেন্টের জন্য এই বিজ্ঞানীদের আবেদন করতে বলা হয়। এখন সেই পেটেন্ট কবে আসে তার প্রতীক্ষায় রয়েছেন এই বিজ্ঞানীরা।

গৌতমবাবু জানান, এই পার্টিকলটি ব্রাউনিয়া গতিতে চলাচল করে টার্গেটে আঘাত করে। মশার লার্ভা বিনাশে এটি খুবই কার্যকরী। তবে এই পার্টিকল জলাশয়ে থাকা অন্যান্য পোকামাকড় বা প্রাণীর কোনও ক্ষতি করে না। ফলে এটা ইকোলজিক্যাল-ও। সাম্প্রতিককালে মশা ও মশাবাহিত রোগ প্রকোপ অত্যধিক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছে। প্রাণঘাতীও হচ্ছে এই রোগ। নামী সংস্থার লিকুইড, ধূপের ব্যবহার করেও মশার হামলা থেকে মুক্তি মিলছে না। এইসব রাসায়নিকের প্রতিরোধ ক্ষমতা মশার মধ্যে গড়ে ওঠায়। মশার বংশবিস্তার রুখতে গাপ্পিমাছ,তেচোখা মাছের ব্যবহারও হয়েছে।ব্যাকটেরিয়ারও সাহায্য নেওয়া হয়েছে। কিন্তু মশককূলের সম্পূর্ণ বিনাশে সবথেকে বেশি কার্যকর হবে ন্যানো প্রযুক্তি। দাবি করছেন এই বিজ্ঞানীরা।

গৌতমবাবু বলেন, “মশা নিধনের উপাদান যত সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম হবে ততই তারা লার্ভার উপর হামলায় ততটা বেশি সক্ষম হবে। সজোরে আঘত হানবে। এই আবিষ্কার সেটাই করছে।” বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন এখনও পেটেন্ট না মেলায় বিশেষ প্রজাতির গাছটির নাম তাঁরা প্রকাশ করছেন না। পেটেন্ট মিললে এই আবিষ্কারের ফিল্ড অ্যাপ্লিকেশনও শুরু করা হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement