চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: দলীয় সম্মেলনে নিজেরই দলের মন্ত্রীর নামে প্রকাশ্য সমালোচনা করে বিতর্কে জড়ালেন পশ্চিম বর্ধমান তৃণমূলের জেলা সভাপতি। মন্ত্রী মলয় ঘটকের নাম নিয়ে সরাসরি তোপ দাগলেন জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন (দাশু)। রবিবার রানিগঞ্জের বাঁশরায় তৃণমূলের এসসি, এসটি ওবিসি সেলের প্রথম জেলা সম্মেলনে দাশু বিতর্কিত মন্তব্যটি করেন। ভি শিবদাসন তাঁর বক্তব্যে বলেন, “মন্ত্রী মলয় ঘটক রাজ্যের মন্ত্রী নন, জেলারও মন্ত্রী নন তিনি শুধুমাত্র উত্তর আসানসোল কেন্দ্রের মন্ত্রী। যত উন্নয়ন তাঁর কেন্দ্রেই হয়েছে, বঞ্চিত থেকে গিয়েছে কুলটি বারাবনি রানিগঞ্জ অন্ডাল পান্ডবেশ্বর।”
[বিয়ের প্রস্তাব নাকচ, প্রেমিকাকে অশ্লীল মেসেজ পাঠিয়ে ধৃত যুবক]
এদিনের সম্মেলনে মূল বক্তা ছিলেন তৃণমূলের এসসি-এসটি-ওবিসি সেলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুনীল মণ্ডল। উপস্থিত ছিলেন মেয়র তথা বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারি, জেলা সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরি, প্রাক্তন বিধায়ক সোহরাব আলি-সহ অন্যরা। কিন্তু তৃণমূল জেলা সভাপতির বক্তব্য ওই সম্মেলনকে বিতর্কিত জায়গায় পৌঁছে দেয়। ভি শিবদাসন তাঁর বক্তব্যে আগাগোড়া মন্ত্রী মলয় ঘটককে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “দু’বারের মন্ত্রী হওয়ার পর জেলার উন্নয়নের স্বপ্ন দেখেছিলাম আমরা, কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেবার কমিশনের অফিস, সরকারি সমস্ত ঘোষণা এমনকী চাকরি হওয়ার থাকলেও সবই আসানসোলেই হয়েছে। মন্ত্রী যত উন্নয়ন করছেন সব নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেই করেছেন। অন্য বিধানসভা কেন্দ্রে কাজ না হওয়ায় ২০১৪-এর লোকসভায় বিজেপি প্রচুর ভোট পেয়ে জয় লাভ করেছে।”
জেলা সভাপতির এই বক্তব্যের পর গুঞ্জন ওঠে সভামঞ্চে। এই বিষয়ে রাজ্যের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কলকাতা থেকে ফোনে বলেন, “দলীয় ব্যাপার নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে বা বাইরে কিছু বলতে চান না। এই নিয়ে তিনি দলীয় বৈঠকেই উত্তর দেবেন। তিনি বলেন দাশুর বক্তব্য তিনি শুনেছেন। তিনি মনে করেন দলের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি না করে এই মূহূর্তে তৃণমূলের মূল প্রতিপক্ষ দেশের শত্রু বিজেপি। তাঁর ফোকাস থাকা উচিত বিজেপির বিরুদ্ধে।”
নাম না করে দাশু বিরোধী জেলাস্তরের এক নেতা মলয় ঘটকের হয়ে বলেন, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের নতুন ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। প্রত্যেকটি হয়েছে জেলা সদরে। আসানসোল শিলিগুড়ি ও কলকাতায় লেবার কমিশনের অফিস হয়েছে। প্রত্যেকটি লেবার কমিশন অফিসের আওতায় ৬টি করে জেলা রয়েছে। সবগুলি জেলা সদরেই রয়েছে। যেখানে যেখানে চাকরীর ক্ষেত্র সেখানে স্থানীয়রাই সুযোগ পায় এটাই নিয়ম। জামুড়িয়ার শিল্পতালুক বা রানিগঞ্জের শিল্পতালুকে সেখানকার ছেলেরাই কাজ পাবে আসানসোলের ছেলেরা পাবে না। এ ব্যপারে মলয় ঘটকের কিছু করার নেই। দুর্যোগ মোকাবিলা কেন্দ্র বা আইটি হাব যা হয়েছে তার জমি দিয়েছে এডিডিএ। যার চেয়ারম্যান ছিলেন ও আছেন দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তাপস বন্দ্যেপাধ্যায়। এই সমস্ত সিদ্ধান্ত নবান্ন থেকে হয়, মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতিতেই হয়। তাই ভি শিবদাসন(দাশু) যা বলছেন তার অর্থ মুখ্যমন্ত্রীকেই চ্যালেঞ্জ করা।
[আরও আরামদায়ক টয়ট্রেন সফর, আসছে নয়া এসি রেক]
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.