ছবি : মুকুলেসুর রহমান।
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সুপারফাস্ট ট্রেনের সঙ্গে সেলফি তুলতে গিয়ে মৃত্যু কিশোরের। মৃতের নাম বিশ্বজিৎ মির্ধা (১৫)। বাড়ি ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ে। লক্ষ্মীপুজোয় দিদির বাড়িতে বেড়াতে আসে ওই কিশোর। বাড়ি লাগোয়া রেল স্টেশন। তাই পুজোর ঘোরাঘুরির ফাঁকে গোটা দিন ধরে এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের দৃশ্যটিও উপভোগ করছিল বিশ্বজিৎ। কোনও একটা সময় নিজেই চলন্ত ট্রেনের সঙ্গে সেলফি তোলার চেষ্টা করে। তখনই সংশ্লিষ্ট রেললাইনে চলে আসা মালগাড়ির ধাক্কায় গুরুতর জখম হয় ওই কিশোর। তাকে তড়িঘড়ি গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেলে বিশ্বজিতের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ওইদিন রাতেই হাসপাতালে মৃত্যু হয় কিশোরের। পুজোতে দিদির বাড়ি বেড়াতে এসে এহেন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটায় নোয়াদার ঢাল স্টেশন লাগোয়া এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।
জানা গিয়েছে, পাকুড়ে বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মির্ধা পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদ থানার কাঁকোড়া গ্রামে মামার বাড়িতেই থাকতো। বছর খানেক আগে বর্ধমানের নোয়াদার ঢাল এলাকায় তার দিদির বিয়ে হয় স্থানীয় যুবক সঞ্জয় তুড়ির সঙ্গে। লক্ষ্মীপুজোয় সেই দিদির বাড়িতেই বেড়াতে আসে ওই কিশোর। বাড়ির কাছেই নোয়াদার ঢাল স্টেশন। সেখানে অহরহ এক্সপ্রেস ট্রেনের আনাগোনা। পুজোর ফাঁকে এসব দেখতেই ব্যস্ত থাকতো বিশ্বজিৎ। শুক্রবার সকালে বোলপুরগামী শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস দেখতে পেয়ে সেলফি তোলার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠে বিশ্বজিৎ। তড়িঘড়ি লাইনের উপরে দাঁড়িয়ে শুরু হয় ছবি তোলার কাজ। ততক্ষণে কাছে চলে এসেছে মালগাড়ি। সেলফির ঝোঁকে সেদিকে খেয়ালই নেই কিশোরের। সেই মালগাড়ির ধাক্কাতেই রেললাইনের ধারে পড়ে যায়া বিশ্বজিৎ। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে দিদির শ্বশুরবাড়িতে খবর দিলে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা হয়।
মৃত কিশোরে মামা শংকর মির্ধা জানান, বিশ্বজিৎ পড়াশোনা করত না। বাড়িতেই থাকত। শুক্রবার সকালেই লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে দিদির বাড়ি গিয়েছিল। তারপর এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল। এই প্রসঙ্গে রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, রেললাইনে সেলফি তুলতে গিয়ে যাতে কেউ বিপদ ডেকে না আনেন তারজন্য সচেতনতামূলক প্রচার করা হয়। এরপরেও কেউ সচেতন না হলে বিপদ এড়ানো মুশকিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.