সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: চরম আর্থিক অনটন নিত্যসঙ্গী। বাধ্য হয়ে মাঝপথে পড়া বন্ধ করে কাজের সন্ধান শুরু করেছিল দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। এরপর ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করতেই হাতে এল ‘লক্ষ্মী’। মিলল আর্থিক সাহায্য। ফের বই কিনে এবার ভবিষ্যৎ গড়াই লক্ষ্য কাঁকসার অভি গঙ্গোপাধ্যায়ের।
কাঁকসার কুলডিহা গ্রামের বাসিন্দা অভি গঙ্গোপাধ্যায়। দীর্ঘ রোগভোগের পর ২০১১ সালে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় তার বাবার। মা বকুলদেবী গৃহবধু। সংসারে রোজগেরে বলতে কেউ নেই। অত্যন্ত দারিদ্রতা সত্ত্বেও মাধ্যমিক পাশের পর উচ্চমাধ্যমিক স্তরে মলানদিঘি দুর্গাদাস উচ্চবিদ্যালয়ে ভরতি হয় অভি। কিন্তু দ্বাদশ শ্রেণিতে উঠতেই পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। কোনও পাঠ্যবইও কেনা সম্ভব হয়নি তার পক্ষে। এক পর্যায়ে বইয়ের অভাবে স্কুলে যাওয়ায় বন্ধ করে দেয় অভি। সেই সময় স্থানীয় তৃণমূল নেতারা জনসংযোগ কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে ‘দিদি বলো’র প্রচারে হাজির হয়েছিলেন কুলডিহাতে। তখনই অভির হাতে যায় ‘দিদিকে বলো’র কার্ড।
সেই কার্ডে ‘দিদিকে বলো’র নম্বর দেখে আর এক মুহূর্তেও নষ্ট করেনি অভি। ফোন করে পরিবারের দুর্দশার কথা জানায় সে। এরপরই মলানদিঘি পঞ্চায়েত থেকে মেলে আর্থিক সাহায্য। সম্প্রতি মলানদিঘি পঞ্চায়েতের প্রধান অভির হাতে তুলে দিয়েছে তিন হাজার টাকার একটি চেক। প্রধান পীযুষ মুখোপাধ্যায় জানান, “দিদিকে বলো-এ ফোন করেছিলেন পড়ুয়া। পঞ্চায়েতে নির্দেশ আসে এই পড়ুয়ার হাতে তিন হাজার টাকা তুলে দেওয়ার জন্যে। নির্দেশ মতো সেই আর্থিক সাহায্যই তুলে দেওয়া হল।”
মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বকুলদেবী বলেন, “মনে বল এল। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল আমার একমাত্র সন্তান অভি। এই টাকায় ফের বই কিনে পড়াশোনা করতে পারবে ও।” অভি তো ভাবতেও পারেনি ফোন করলেই সমাধান হবে। চেক পেয়ে আনন্দিত অভি জানায়, “প্রতিশ্রুতি নয়, সমস্যার সমাধানও হয় একটা ফোন করলেই। এটা ভেবেই আনন্দ হচ্ছে।” ওই পড়ুয়ার কথায় এবার মুখ্যমন্ত্রীর মান রাখতেই মন দিয়ে পড়াশুনা করতে হবে তাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.